এম এ রহিম, চৌগাছা (যশোর)
জানুয়ারি ২৬, ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম
এম এ রহিম, চৌগাছা (যশোর)
জানুয়ারি ২৬, ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম
যশোরের চৌগাছায় ড্রাগন চাষে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন আধুনিক ফল চাষী বাকী-বিল্লাহ। তিনি এ অঞ্চলের নতুন নতুন ফল চাষের উৎদ্ভাবক বলা চলে। এবার তিনি আবিস্কার করেছেন শীত মৌসুমে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে কি ভাবে ভরা শীত মৌমুমেও ড্রাগফল পাওয়া যায়।
ড্রাগন মুলত গরম কালের ফল। শীতে প্রচন্ড ঠান্ডায় ড্রাগনের ফুল যাতে নষ্ট না হয় তারই জন্যে এই পদ্ধতি। ফলচাষী বাকি-বিল্লাহ নতুন এই পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেক সফল। এ উপজেলায় নতুন নতুন ফল চাষের উৎভাবক বাকি-বিল্লাহ তাই অনেকে তাকে পিয়ারা বাকি-বিল্লাহ ও কেউ কেউ ড্রাগন বাকি-বলেও চেনেন। তার এ নতুন চাষ পদ্ধতি ব্যাপক ভ‚মিকা রাখছেন এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে। বলাচলে এ উপজেলার সফল ফলচাষি বলতে তিনিই। মুলত বাকি-বিল্লার দেশের বাড়ী সাতক্ষীরা জেলায়। ১৯৯৮ সালে তিনি চৌগাছাতে চলে আসেন। এখানে এসে প্রথমদিকে তিনি নার্সারী ব্যবসা শুরু করেন। পরে শুরু করেন ফলের চাষ। প্রথমে পিয়ারা চাষ, পরে কুল যতদিন যায় তিনি নতুন নতুন নানা ধরনের ফলের চাষ করে বাজিমাত করেন। নতুন জাতের সব ফল চাষে তিনি পান সাফল্য। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে অন্তত ২৫ বিঘা জমিতে নতুন জাতের পেয়ারা, ড্রাগন, চায়না জামসহ নানা ধরনের ফলের চাষ রয়েছে তার।
কৃষক বাকি-বিল্লাহ বলেন, ড্রাগন ক্ষেতে রাতে বিদ্যুতের আলো ব্যবহার করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন তিনি। ড্রাগন মুলত গরম কালের আবাদ। তবে শীতের রাতে ক্ষেতে বিদ্যুতের আলো জ্বালিয়ে রাখলে অসুমায়েও ড্রাগন ফলানো সম্ভব। খরচ একটু বেশী হলেও অসময়ের ড্রাগন দাম ভালো পাওয়া যায়। ফলে অসময়ের ড্রাগনে লাভ হয় বেশী। তিনি জানান, শীতে দিন ছোট আর রাত বড় হয়। এই সময়ে দিনে তাপমাত্রা ব্যাপক কম থাকে। আবার রাতে পড়ে প্রচন্ড ঠান্ডা। যে কারণে ড্রাগন তার স্বাভাবিক ফুল ও ফল দিতে পারেনা। এজন্যে প্রতি রাতে অন্তত ৪/৫ ঘন্টা দিনের আলোর মত জমি আলোকিত করলে নিশ্চিত ভালো ফলন হবে। তাই এ পদ্ধতি গ্রহণ করেছি।
শনিবার (২৫ জানুয়ারী) রাতে উপজেলার টেংগুরপুর গ্রামের পূর্ব মাঠে কৃষক বাকি-বিল্লাহর ড্রাগন ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষেতের ভিতর বিদ্যুতের শত শত বাল্ব জলছে। ক্ষেতের চারিদিক আলোর ঝলকানি। আলোকিত হয়ে রয়েছে পুরা ড্রাগন ক্ষেত। তিনি নিজ হাতে ক্ষেতে পরিচর্যার কাজ করছেন। তার মুখে সুখের হাঁসি। বিন্দুমাত্র ক্লান্তির লেস নেই তার শরীরে। তিনি বলেন আমি রাত-দিন কোন না কোন ফল বাগানে কাজ করতে ভালোবাসী এতে আমার শরীর ও মন দুটাই ফুরফুরে থাকে।
এ সময় তার ক্ষেতে কাজ করা শ্রমিক আশাদুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ এ ফল বাগানে কাজ করছি। রাতে কাজ করলে ডবল হাজিরা পাই। চলতি মৌসুমে বাকি-বিল্লাহর প্রায় ২৫ বিঘা জমিতে নতুন জাতের ড্রাগন, কুল ও চায়না জামসহ বিভিন্ন ফলের চাষ রয়েছে। এরমধ্যে টেংগুরপুর এ মাঠে একজায়গায় রয়েছে সাড়ে তিন বিঘা উন্নত বিদেশী জাতের ড্রাগনের চাষ।
এদিকে ড্রাগন ক্ষেতে নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করায় প্রতিদিনই এমনকি রাতেও বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে কৃষক ও উৎসুক সাধারণ মানুষ বাকি-বিল্লাহর ড্রাগন বাগান দেখতে আসে।
চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হোসাইন বলেন, শীতে দিন ছোট আর রাত বড় হয়। এই সময়ে দিনে তাপমাত্রা বহুলাংশে কম থাকে। আবার রাতে পড়ে ঠান্ডা। যে কারণে ড্রাগন তার স্বাভাবিক ফুল ও ফল দিতে পারেনা। তাই ড্রাগন ক্ষেতে বিদ্যুতের আলো ব্যবহার করলে ভলো ফল পাওয়া সম্ভব।
আরএস