Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫,

ভেড়ামারায় এলপিজি স্টেশনে সিলিন্ডার রিফিলের অভিযোগ

হেলাল মজুমদার, ভেড়ামারা

হেলাল মজুমদার, ভেড়ামারা

জানুয়ারি ২৭, ২০২৫, ০৪:০২ পিএম


ভেড়ামারায় এলপিজি স্টেশনে সিলিন্ডার রিফিলের অভিযোগ

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় গাড়ির জ্বালানি লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ফিলিং স্টেশনে অবৈধভাবে রিফিল করা হচ্ছে রান্নার কাজে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার।

ভেড়ামারা এলপিজি স্টেশনে নিয়মিত অবৈধ রিফিলের কাজ চলছে। এতে যে কোনো সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে এলপিজি এবং রান্নার গ্যাসের পার্থক্য না বুঝেই ক্রেতা বিক্রেতারা এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

কুষ্টিয়া-পাবনা সড়কের ভেড়ামারা ১২ মাইল এলাকায় মেসার্স শাহার ফিলিং স্টেশনে এসআর এলপিজি স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারে অবৈধভাবে ক্রস ফিলিং করা হচ্ছে। নির্ধারিত বাজারমূল্য কয়েশশত টাকা কমে এ রিফিল পাওয়া যাচ্ছে। এতে ব্যবসায়ী এবং ভোক্তারা দেদারসে ফিলিং স্টেশন থেকে সিলিন্ডার রিফিল করছে। সারাদিন গ্যাসের সিলিন্ডার হাতে নিয়ে বিভিন্ন মানুষ আসছে গ্যাস ক্রস-ফিলিং করতে। যার যেমন চাহিদা সে তেমন গ্যাস ক্রস ফিলিং করে নিয়ে যাচ্ছে।

বিস্ফোরক অধিদপ্তর সূত্র বলছে, রান্নার কাজে ব্যবহৃত এলপিজিতে ৭০ শতাংশ কোপেন ও ৩০ শতাংশ ডিউটেন সংমিশ্রণ থাকে। আর গাড়িতে ৬০ শতাংশ কোপেন ও ৪০ শতাংশ ডিউটেন সংমিশ্রণ করে ব্যবহার করতে কোপেন ও ডিউটেন সংমিশ্রণের পার্থক্য থাকায় এলপিজি গ্যাস কোনোভাবেই রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায় না। কিন্তু না জেনে না বুঝে এলপিজি স্টেশনগুলো রান্নার সিলিন্ডারে গ্যাস রিফিল করে দিচ্ছে। আর এসব সিলিন্ডার ব্যবহার হচ্ছে রান্নার কাজে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ গ্যাস তৈল জাতীয়। রিফিল সংমিশ্রণ সঠিকভাবে না হলে গ্যাস সিলিন্ডারের নিচে বসে থাকে। নাড়াচাড়ার কারণে বিস্ফোরণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

স্থানীয়রা জানায়, মেসার্স শাহার ফিলিং স্টেশনে এসআর এলপিজি স্টেশনে প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রান্নার সিলিন্ডার গ্যাস রিফিল করা হচ্ছে। অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পরিবহণযোগে খালি সিলিন্ডার এনে রিফিল শেষে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। সরকারের নির্ধারিত মূল্য থেকে দাম কম রাখায় দিন দিন বাড়ছে এর চাহিদা।

ভেড়ামারায় একাধিক সিলিন্ডার ব্যবসায়ী জানান, এলপিজি স্টেশনে সিলিন্ডার রিফিল করার কারণে আমাদের বিক্রি আগের থেকে অনেক কমে গেছে। কারণ এলপিজি স্টেশনে রিফিল করা সিলিন্ডার বাজার মূল্যর চেয়ে ২ থেকে ৩০০ টাকা কমে বিক্রি করছে। এতে সাধারণ মানুষ রিফিলে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও সেখান থেকে গ্যাস নিচ্ছেন। বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই।

মেসার্স শাহার ফিলিং স্টেশনে এসআর এলপিজি স্টেশন মালিক বাবুর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এসোসিয়েশনের সাথে কথা বলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভেড়ামারার একজন সিলিন্ডার ব্যবসায়ী বলেন, এলপিজি স্টেশন থেকে বাসা-বাড়ির সিলিন্ডারে গ্যাস ভরা সম্পূর্ণ নিষেধ।

তিনি বলেন, এলপিজি স্টেশন থেকে বাসা বাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারে গ্যাস রিফিল করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোন সময় অঘটন ঘটতে পারে। আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা, তাই এই কাজটি করছি।

কুষ্টিয়া জেলার পেট্রোবাংলা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তপন সাহেব বলেন, কোনো এলপিজি স্টেশন থেকে বাসাবাড়িতে রান্নার জন্য সিলিন্ডার গ্যাস রিফিল করার নিয়ম নেই।

ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, রান্নার জন্য সিলিন্ডারের গ্যাস আর গাড়ির জন্য ব্যবহার করা গ্যাস এক জিনিস নয়। কোনো সিএনজি স্টেশন যদি এই কাজ করে থাকে তাহলে এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইএইচ

Link copied!