জাহিদ হাসান, মাদারীপুর
জানুয়ারি ২৭, ২০২৫, ০৬:১১ পিএম
জাহিদ হাসান, মাদারীপুর
জানুয়ারি ২৭, ২০২৫, ০৬:১১ পিএম
মাদারীপুরে পৌর শহরের অবৈধভাবে দখল হওয়া খালগুলো উদ্ধারে মাঠে নেমেছে পৌরসভা। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মাদারীপুর পৌরসভার প্রশাসক শহরের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ‘সৈয়দারবালী খাল’ উদ্ধারের অভিযান পরিচালনার মধ্য দিয়ে খাল উদ্ধারের সূচনা করেন। সেনা বাহিনী, পুলিশসহ পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে এ উদ্ধার অভিযান করা হয়।
জানা যায়, মাদারীপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ের পৌর চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রদের সময় রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে শহরের অধিকাংশ খাল দখল করে বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করে প্রভাবশালী মহল। খালগুলো দখল হয়ে যাওয়ার কারণে একটু বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন স্থানে পানি জমে যায়। নামার কোন জায়গা না থাকায় দীর্ঘদিন পানি বন্ধি হয়ে থাকতে হয় পৌর বাসিন্দাদের। বিভিন্ন সময় পৌর সভার চেয়ারম্যান বা মেয়রদের অবহিত করলেও রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাবের কারণে তারা সেদিকে কর্ণপাত করতো না। এভাবেই চলে আসছে যুগের পর যুগ। ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে খালগুলো।
স্থানীয় সরকার মাদারীপুরের উপ পরিচালক মো. হাবিবুল আলম মাদারীপুর পৌরসভার প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব নেয়। দায়িত্ব নেয়ার পরই তিনি জানতে পারেন খাল দখলের কথা, জানতে পারেন পৌরসভার বাসিন্দাদের দুর্ভোগের করা। তাই তিনি উদ্যোগ নেন খাল উদ্ধারের। প্রথমেই পৌর এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের মাতুব্বর বাড়ি মসজিদ থেকে ঋষিবাড়ি পর্যন্ত খালটির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। খালটি প্রায় গত ৩০ বছর যাবত অবৈধ দখল হওয়ায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এখন খালটি মুক্ত হওয়ায় সৈদারবাবালী-পানিছত্র ও শকুনী (আংশিক) এলাকার প্রায় ১০ হাজার পরিবার জলাবদ্ধতা থেকে নিরসন পাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা তাজুল ইসলাম, রশিদ মোল্লা জানান, এই খালটি উদ্ধার করে খনন করা হবে এই খবরে আনন্দিত এলাকার মানুষ। বারবার আমরা পৌরসভা যোগাযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। এমনকি বিভিন্ন সময় আমার সাংবাদিকদের সাহায্য চেয়েছি। তারা তাদের সাধ্যমত সংবাদ পরিবেশন করেছে কিন্তু মেয়ররা বিষয়টি আমলে নেয়নি। আমরা যারা এই এলাকায় বসবাস করি তারা জানি পানি বন্দি হয়ে থাকতে কত কষ্ট হয়।
মাদারীপুর পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার আবু আহমদ ফিরোজ ইলিয়াস বলেন, ‘পৌর শহরের যতগুলো খাল রয়েছে সবগুলো খালের তালিকা তৈরী করেছি আমরা। যে খালগুলো দখল হয়ে গেছে সেসব খালগুলোতেও দ্রæত উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হবে। খালগুলোতে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করে খালগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার পাশাপাশি মানুষের জলাবদ্ধার দুর্ভোগও কমিয়ে আনতে পৌর প্রশাসক নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে আমরা সৈয়দারবালী খালের শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। এই ধারা অব্যাহত থাকবে। ’
মাদারীপুর পৌরসভার প্রশাসক ও উপ-সচিব মো. হাবিবুল আলম বলেন, মানুষের দুর্ভোগ কমাতে দখলকৃত খালগুলো উদ্ধার করবো। এখানে কেউ বাঁধা দিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পৌর নাগরিকদের সকল সুযোগ সুবিধা দেখার দায়িত্ব পৌরসভার। কিছু লোকের কারনে পৌর নাগরিকদের ভোগান্তিতে ফেলতে দেবনা। আমি যতদিন আছি পৌরবাসীর সেবা করে যাব।
আরএস