Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫,

ময়মনসিংহ নগরীতে দিনভর অটো চলাচল বন্ধ, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবীতে সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও

আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ

আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ

জানুয়ারি ২৭, ২০২৫, ০৮:৫০ পিএম


ময়মনসিংহ নগরীতে দিনভর অটো চলাচল বন্ধ, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবীতে সিটি কর্পোরেশন ঘেরাও

ময়মনসিংহ নগরীতে যানজট নিয়ন্ত্রণে ৬টি রুটে ইজিবাইক চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে সিটি করপোরেশন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে চালকরা। এর আগে সোমবার সকাল থেকে নগরীতে অটো চলাচল বন্ধ রাখে চালকরা। তবে এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে কিছুটা ভোগান্তি হলেও প্রধান নগরীতে যানজট না থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেন অনেকে।

বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহ নগরীতে অনুমোদিত ইজিবাইক ৭ হাজার, ব্যাটারি চালিত মোটা ও চিকন তিন চাকার রিকশা ১২হাজার থাকলেও প্রতিদিন প্রতিদিন গড়ে ৮—১০ হাজার যান চলাচল করে। এতে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। যানজট ভোগান্তি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ১৮ জানুয়ারি ৬টি রুটে ইজিবাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেন সিটি করপোরেশন।

যার ফলে জিলা স্কুল মোড় থেকে নতুন বাজার হয়ে গাঙ্গিনারপাড়, সিকে ঘোষ রোড, দুগার্বাড়ি রোড এবং স্বদেশী বাজারে ইজিবাইক চলাচল না করায় নগরী একেবারেই যানজটমুক্ত হয়। স্বস্তি প্রকাশ করেন সাধারণ মানুষ। যদিও চালকরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে অটোতে যাত্রী উঠছে না। এর প্রতিবাদে কয়েকদিন ধরে ইজিবাইক চালকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গত রোববার বিকেলে ইজিবাইক চালকরা সার্কিট হাউজ মাঠে জড়ো হয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে সোমবার সকাল থেকে নগরীর সকল রুটে অটো চলাচল বন্ধ রাখে। চালকরা প্রত্যেক মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে শহরের ভেতরে অটো ও রিকশা যেন না ঢুকতে পারে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন। তবে দুভোর্গ এড়াতে প্রশাসন শহরে রিকশা চলাচলের সুযোগ করে দেন।

সকাল থেকে নগরীতে যানবাহনের কারণে সাধারণ মানুষকে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে দেখলেও বেশির ভাগ মানুষ অটো চলাচলের নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছেন। পরে বিকেল তিনটার দিকে কয়েক শ চালক সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দেন।

চরপাড়া  মোড়ের বাসিন্দা আবুল  হাসেম  বলেন, নগরীতে অটো চলাচলের কারণে যানজট হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু অটো আবার বন্ধ করে দিলেও চালকদের যেমন সমস্যা তেমনি আমরা যারা সাধারণ মানুষ আছি তাদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অন্য রিকশাগুলো অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। সেগুলো তদারকি করা প্রশাসনের দরকার।

নতুন বাজার  এলাকার বাসিন্দা সাহেদ মিয়া  বলেন, অপরিকল্পিত নগরী হওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত অটো চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় যত সমস্যা হচ্ছে। গেল কয়েকদিন ধরে গাঙ্গিনারপাড় অটো ঢুকতে না পারায় কোন যানজট নেই। আমরা চাই সকল কিছু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকুক।


ইজিবাইক চালক রুবেল  বলেন, আমরা লাইসেন্স নিয়েছি পুরো নগরীতে চলাচল করার জন্য, কোন সুনির্দিষ্ট রুটে নয়। তখন কতৃর্পক্ষকে ভাবা উচিৎ ছিল। হঠাৎ অটো চলাচল বন্ধ করে দিয়ে যানজট কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আমরা সিটি করপোরেশন এলাকা ছাড়বো না।

আরেক চালক শফিকুল ইসলাম বলেন, নগরীতে অটো চলাচল করতে না পারলে বালবাচ্চা নিয়ে আমাদের পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। আমাদের পেটে লাথি দিয়ে কার লাভ? কেন আমাদের নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। আন্দোলন নয় অটো চালিয়ে জীবন পারি দিতে চাই, আমরা আমাদের সহযোগিতা করুন।

কোতোয়ালি মডেল থানার  অফিসার ইনচার্জ  (ওসি) শফিকুল ইসলাম খান বলেন, অটো চালকদের কারণে নগরীতে যেন কোন ভোগান্তি সৃষ্টি না হয় সে জন্য প্রশাসন কাজ করেছে। বিকেলে তারা সিটি করপোরেশ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছে, বিশৃঙ্খলা এড়াতে সেখানেও পুলিশের নজরদারি রয়েছে।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সচিব সুমনা আল মজীদ বলেন, যানজট নিয়ন্ত্রণে নগরীর ৬টি রুটে অটো চলাচলে সকলের মতামতের ভিত্তিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এরপর থেকে চালকরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি স্মারকলিপি দিয়েছে। আলাপ—আলোচনার মাধ্যমে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরএস

Link copied!