বরিশাল ব্যুরো
ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫, ০৯:৩৩ পিএম
বরিশাল ব্যুরো
ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫, ০৯:৩৩ পিএম
পাওনা টাকা আদায় করতে না পেরে তিন সন্তানের জননী হাসিনার স্বর্ণালংকার ছিনতাইয়ের পর পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ গুম করতে বাড়ির পার্শ্ববর্তী কীর্তনখোলা নদীর শাখা খালে মৃতদেহ ভাসিয়ে দেন প্রতিবেশী হত্যাকারী ফিরোজ।
হত্যার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর এমনই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন হত্যাকারী ফিরোজ হাওলাদার। গ্রেপ্তার হত্যাকারী হলেন, ফিরোজ সদর উপজেলার চরকাউয়া খেয়াঘাট এলাকার খন্দকার বাড়ির মো. ইউসুফ হাওলাদারের ছেলে।
বুধবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক মো. ছগির হোসেন।
মঙ্গলবার সকালে চরকাউয়া খান বাড়ির পিছনের খাল থেকে তিন সন্তানের জননী হাসিনা বেগমের (৪০) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি চরকাউয়া গ্রামের বাসিন্দা ও চরকাউয়া মাঝি মাল্লা সমিতির সাবেক সভাপতি মো. ওমর ফারুকের স্ত্রী।
ডিবির পরিদর্শক ছগির হোসেন বলেন, সুদের জন্য দেওয়া পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে নারীকে হত্যা করেছে ফিরোজ। পরে মরদেহ গুম করতে খালে ফেলে দেয়। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মরদেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফিরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তার কাছ থেকে গৃহবধূর ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন, গলার স্বর্ণের চেইন দুইটি, আংটি দুইটি, এক জোড়া কানের দুল এবং হাতের বালা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ফিরোজ।
তার স্বীকারোক্তির বরাতে পরিদর্শক ছগির বলেন, হত্যাকারী ফিরোজের স্ত্রী একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করে দুই লাখ টাকা জমায়। করোনার সময় তার চাকরি চলে যায়। তখন স্ত্রীর পরামর্শে দুই লাখ টাকা গ্রামের সুদ ব্যবসায়ী হাসিনা বেগমকে দেওয়ার সিদ্বান্ত নেয়। স্ত্রীর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা নেয় ফিরোজ। কিন্তু মাসিক আড়াই হাজার টাকা চুক্তিতে হাসিনাকে দেয় দেড় লাখ টাকা। দুই মাস সুদ দেওয়ার পর হাসিনা টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে।
হাসিনা প্রভাবশালী হওয়ায় কোনোভাবে টাকা আদায় করতে পারেনি। তাই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই অনুযায়ী গত সোমবার বাসায় কেউ ছিল না। তাই হাসিনাকে প্রলোভন দিয়ে বাসায় নেয় ফিরোজ। তিনি বাসায় গেলে পাঁচটি ঘুমের ওষুধ মেশানো দুধ খেতে দেয়। ওই দুধ খেয়ে হাসিনা অচেতন হয়ে পড়ে। রাত একটার দিকে গৃহবধূর হাত-পা বেঁধে তার স্বর্ণালংকার খুলে ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। পরে খালে ফেলে দেয়।
হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন ফারুক। বরিশালের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুন নাজমিন জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জিআরও মো. হারুন জানান।
এদিকে বুধবার বেলা ১১টায় চরকাউয়া বাসস্ট্যান্ডে হাসিনা হত্যাকারী গ্রেপ্তারে মানববন্ধন করা হয়। স্থানীয় জনগণের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে হত্যাকারী গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানানো হয়।
ইএইচ