মিরাজ আহমেদ, মাগুরা
ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫, ০১:৫৪ পিএম
মিরাজ আহমেদ, মাগুরা
ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫, ০১:৫৪ পিএম
মাগুরা মহাসড়কে চোখ পড়লেই যেন মনে হয় ঢেউ খেলানো টিন দিয়ে তৈরি রাস্তা। পুলিশ লাইন গেট থেকে ঢাকা রোড, এ যেন মৃত্যুফাঁদ। প্রতিদিনই এ স্থানে ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয়রা জানায়, এ মহাসড়কে প্রতিনিয়তই বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যা। শহরের মালঞ্চ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে পারনান্দয়ালী পর্যন্ত রাস্তা পার হতে হয় মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। রাস্তার এমন অবস্থায় চলার পথে বিকল হয়ে পড়ে যানবাহন।
সড়কের পাশের মুদিখানা ব্যবসায়ী শাহআলম জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় ১০ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেল ছিটকে পড়ে। গত দুই সপ্তাহে বেশ কয়েকজন মোটরসাইকেল আরোহী আহত হয়েছেন।
সড়কটি দিয়ে চলাচল করা মোটরসাইকেল চালক আলামিন জানান, ঢেউটিন আকৃতির রাস্তায় যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা আবার ঘটতে পারে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৪ লেনের নামে ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণে শুভঙ্করের ফাঁকি হওয়ায় চরম জনদুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে। ৮.৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে সময় ব্যয় হয়েছে দীর্ঘ ৪ বছর। তবে গত ৯ বছরে ঢেউটিন আকৃতির ২.৩ কিলোমিটার (পুলিশ লাইন থেকে ভায়না মোড়) সড়ক সংস্কার করতে পারেনি সড়ক বিভাগ। প্রতিনিয়ত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও কাজের প্রয়োজনে রাস্তা সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় একদিকে যেমন যানজট তৈরি হচ্ছে, অপরদিকে ঢাকা রোড কাঁচাবাজার আড়ত ব্যবসায়ী ও প্রান্তিক কর্মজীবীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এ স্থানে সড়ক দুর্ঘটনা এবং যানজট যেন প্রতিদিনের রুটিনের একটি অংশ।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রশস্তকরণ কাজের সঙ্গে ল্যান্ড রিকুজিশনে সময় লেগে গেছে অনেক। সড়ক নির্মাণ শেষ না হতেই সড়কটি দেবে ঢেউটিন আকৃতিতে রূপ নেয়। যার ফলে দুর্ঘটনার পাশাপাশি বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।
মাগুরা হাইওয়ে পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ২৩-২৪ সালে এ সড়কে দুর্ঘটনায় ১৬ জনের মৃত্যু ও আহত হয়েছে ১৫ জন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ২০১৬ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স মাগুরার রামনগর থেকে পুলিশ লাইন্স পর্যন্ত ৮.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করে। এর মধ্যে পারনান্দুয়ালী থেকে পুলিশ লাইন্স পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার চার লেনের। বাকি অংশ দুই লেনের। দুই লেনের ৪.৮ কিলোমিটার সড়কের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এছাড়া ঢাকা রোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ব্যক্তি মালিকা অধিগ্রহণ করা জমির উচ্চমূল্যের দাবিতে আলাদতে মামলা করায় জটিলতা তৈরি হলেও সড়ক নির্মাণে রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি।
মাগুরা রামনগর হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ আলমগীর জানান, গত ২৪ সালে এ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা মোট ২২টি। সে ধারাবাহিকতায় মামলা রুজু হয়েছে ২২টি। এ সকল সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সংখ্যা ১৫ জন এবং নিহত সংখ্যা ১৬ জন।
সোমবার দৈনিক আমার সংবাদকে মাগুরা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মহাসড়কটি মেরামতের জন্য প্রস্তাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান, ইভোলিউশনের জন্য মন্ত্রণালয়ে আছে। যত দ্রুত সম্ভব মেরামত করা হবে।
ইএইচ