Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫,

কিশোরগঞ্জে ৩২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহিদ মিনার

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম


কিশোরগঞ্জে ৩২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহিদ মিনার

আসছে একুশে ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বীর শহিদদের স্মরণে পালিত হবে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।

শহিদ মিনারের বেদিতে ফুল দিতে ঢল নামবে অগণিত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম ঐতিহাসিক প্রতীক শহিদ মিনার।

কিন্তু ২১ ফেব্রুয়ারিতে বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার না থাকায় এ দিনটিতে শিক্ষার্থীরা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হয় ভিন্নভাবে। যেসব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই তারা জাতীয় দিবসগুলোতে কলাগাছ ও বাঁশ-কাগজ দিয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করে তাতেই শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।

আবার কেউ কেউ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিচ্ছেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষদের পড়তে হয় বিরম্বনায়।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১ হাজার ৩২৮টি। তারমধ্যে ৩২৩টিতেই নেই শহিদ মিনার। যে সকল উপজেলায় শহিদ মিনার নেই তারমধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর ১৪৩টি বিদ্যালয়ের মধ্যে শহিদ মিনার নেই ৩৩টি, হোসেনপুর ১১১টি বিদ্যালয়ের মধ্যে শহিদ মিনার নেই ৩টি, কটিয়াদীতে ১১৯টি বিদ্যালয়ের মধ্যে শহিদ মিনার নেই ৩৮টি, পাকুন্দিয়ায় ১৯৪টির মধ্যে শহিদ মিনার নেই ৯টি, করিমগঞ্জ ১২৫টির মধ্যে শহিদ মিনার নেই ১৮টি, ভৈরব ৯১টির মধ্যে শহিদ মিনার নেই ৬১টি, ইটনায় ৭২টি মধ্যে শহিদ মিনার নেই ১০টি, মিঠাইমন ৭৫টির মধ্যে শহিদ মিনার নেই ২৭টি, তাড়াইল ৭০টি মধ্যে শহিদ মিনার নেই ১২টি, বাজিতপুর ১১১টির মধ্যে শহিদ মিনার নেই ৮৭টি, অস্টগ্রামে ৮৩টির মধ্যে শহিদ মিনার নেই ২০টি, নিকলীতে ৬০টির মধ্যে শহিদ মিনার নেই ৫টি।

স্থানীয়রা জানান, যেসব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নেই, তারা জাতীয় দিবসগুলোতে কলাগাছ, বাঁশ ও কাগজ দিয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করে সেখানে ফুলেল শ্রদ্ধায় ভাষা শহিদ ও সংগ্রামীদের স্মরণ করেন। আবার কেউ কেউ নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের শহিদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন। এতে দুর্ভোগসহ নানা সমস্যা হয়। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণের দাবি করছেন সর্বস্তরের মানুষ।

সরেজমিনে কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই।

এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী অস্থায়ীভাবে শহিদ মিনার নির্মাণ করে দিবসটি পালন করে থাকেন। আবার কেউ কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেন শহিদ মিনার নির্মাণ করা হলো না এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়গুলোতে সরকারিভাবে শহিদ মিনার নির্মাণে বরাদ্দের অভাব রয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়গুলোতে শহিদ মিনার নির্মাণে বেসরকারিভাবে কেউ এগিয়ে আসে না।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুজিব আলম বলেন, আমাদের সরকারি নির্দেশনা রয়েছে যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে যেন শহিদ মিনার থাকে। বেশ দীর্ঘদিন পূর্বে সরকারি স্লীপফান্ড থেকে শহিদ মিনার তৈরির একটা নির্দেশনা ছিল। কিন্তু তৎকালীন সময় দেখা গেছে জায়গা স্বল্পতা ও স্থান নির্ধারণে জটিলতা কারণে শহিদ মিনার তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তবে আমাদের কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা আছে যে গত জুন মাসে আমরা একটি তথ্য দিয়েছিলাম কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে এটা আবার নতুন করে উদ্যোগ নেয়া হবে।

ইএইচ

Link copied!