Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫,

অপারেশন ডেভিল হান্ট: বাকেরগঞ্জে পুলিশের কোন তৎপরতা নেই

দানিসুর রহমান লিমন, বাকেরগঞ্জ (বরিশাল)

দানিসুর রহমান লিমন, বাকেরগঞ্জ (বরিশাল)

ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫, ০৫:০৯ পিএম


অপারেশন ডেভিল হান্ট: বাকেরগঞ্জে পুলিশের কোন তৎপরতা নেই

গাজীপুরসহ সারা দেশে একযোগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার সন্ধ্যা থেকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু করেছে যৌথ বাহিনী।

সম্প্রতি দেশব্যাপী চাঁদাবাজি, নাশকতা, সরকারবিরোধী লিফলেট বিতরণসহ নানা উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড ও গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ অভিযান।

সাধারণ মানুষ এ অভিযানকে স্বাগত জানালেও বাকেরগঞ্জ উপজেলার বেলায় ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা।

দেশজুড়ে চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টে বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানায় তেমন কেউ গ্রেপ্তার নেই।

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধরতে গেলে পুলিশকে নিতে হয় বিএনপির মতামত। আবার ফ্যাসিস্টদের গ্রেপ্তার না করতে বিএনপির একাধিক নেতা সুপারিশ করেন। এমন অভিযোগ খোদ থানা পুলিশের।

অপারেশন ডেভিল হান্টে ১৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত থানায় কোন গ্রেপ্তার ছিল না। এ নিয়ে ওইদিন রাতে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস ভাইরাল হলে শুক্রবার দুপুরের দিকে পুলিশ দায়সারা অভিযান চালিয়ে গারুরিয়া ইউনিয়ন থেকে মো. রফিকুল ইসলাম নামের একজন ইউপি সদস্য এবং রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বোয়ালিয়া থেকে বাচ্চু হাওলাদার নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে।

অথচ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ৬ জনকে হত্যা করা হয় এবং গুরুতর আহত হয় ৩০-৩৫ জন। দ্বিতীয় গণঅভ্যুত্থানে হত্যা ও আহতের ঘটনায় আলোচিত ছিল বরিশাল জেলার এ থানাটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে পুলিশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গারুড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এএসএম জুলফিকার হায়দারকে গ্রেপ্তার করতে তার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালায়। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হারুন জোমাদ্দার। আওয়ামী লীগ নেতা জুলফিকারকে পালাতে সে সহযোগিতা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

অপরদিকে কলেসকাঠীতে ইউপি সদস্য মিজানকে গ্রেপ্তার না করতে পুলিশকে নিষেধ করেন বিএনপি নেতা শওকত হাওলাদারের পুত্র কামাল হাওলাদার। ইউপি সদস্য মিজানকে গ্রেপ্তার করলে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করা হবে বলেও তিনি হুমকি দেয়। ফ্যাসিস্টদের দোসরদের গ্রেপ্তার ঠেকাতে এরকম অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হারুন সিকদার বলেন, আমিতো আর পুলিশকে গ্রেপ্তার করতে নিষেধ করিনি। পুলিশের কাজ পুলিশ করবে আর আমার কাজ আমি করব।

উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব নাছির হাওলাদার থানা পুলিশের কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সারাদেশে চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টে অন্যান্য থানায় গ্রেপ্তার কার্যক্রম চলমান থাকলেও বাকেরগঞ্জ থানায় কোন ডেভিল গ্রেপ্তার নেই বললেই চলে। ফ্যাসিস্টদের দোসরদের গ্রেপ্তার না করতে যদি কোন বিএনপি নেতা পুলিশকে নিষেধ করে তাহলে সেইসব নেতাদের বিষয়ে জেলা ও উপজেলা বিএনপি নেতাদের অভিহিত করার জন্য পুলিশের প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিএনপির নেতারা পুলিশের কোন কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করিনা। তবে পুলিশ যদি অরাজকতা সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তার না করে সেটাও দুঃখজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বাকেরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, অপারেশন ডেভিল হান্টে শুক্র ও শনিবার দুইদিনে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে ৮ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপারেশন ডেভিল হান্টে মোট কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি তথ্য পরে দিবেন বলে জানান।

তিনি জানান, কোন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার হলেও তারা ডেভিল হান্টের আওতায় পরবে। একই সাথে চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টে পুলিশ ও যৌথ বাহিনী বাকেরগঞ্জে কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি বলেও তিনি জানান।

ইএইচ

Link copied!