Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫,

পাবনায় জমি নিয়ে বিরোধে ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ, আহত ২

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনা প্রতিনিধি

ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম


পাবনায় জমি নিয়ে বিরোধে ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ, আহত ২

পাবনার আতাইকুলার পীরপুর গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে সাদ (১৬) নামে স্কুলপড়ুয়া এক ছেলে ও তার মা তানিয়া আহত হয়েছেন।

শনিবার পাবনা সদর উপজেলার পীরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

আহত সাদ ও তার মা তানিয়া ইসলাম পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা ইউনিয়নের পীরপুর গ্রামের মো. শহিদুল ইসলাম উজ্জলের স্ত্রী ও পুত্র।

পাবনা সদর উপজেলার আতাইকুলা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের, পীরপুর গ্রামে ভুক্তভোগীর নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম উজ্জ্বল তার স্ত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলেও সাদের হাত গুরুতর আহত হওয়ায় বর্তমানে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, জোরজুলুম করে তাদের বসতবাড়ি জমি দখলে নিয়েছে মো. রেজাউল করিম, আলমগীর হোসেন ও তার বাহিনী। তাদের মারধর ও ঘরবাড়ি ভাঙচুরসহ চারভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ এক লক্ষ তের হাজার টাকা লুটে নিয়ে তারা জীবননাশের হুমকি প্রদান করেছে। শুধু প্রাণনাশের হুমকি নয়, উজ্জলের শিশু কন্যাকে অপহরণের হুমকি দেওয়া হয়। তারা এলাকার প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিবাদীদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল।

শনিবার সকাল ১১টায় বিবাদীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লাঠিসোটা, লোহার বড়, হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তরুণের নানার বসতবাড়িতে এসে টিনের বেড়া ভাঙার পাশাপাশি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তরুণ গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে সাদের ওপর হামলা করে রেজা, আলমগীর ও তার বাহিনী। এক পর্যায়ে সাদের মা তানিয়া ইসলাম এগিয়ে আসলে তাকেও কিলঘুষি লাথি দেওয়া হয় এবং চিৎকার করে বলতে থাকে, ‍‍`তোর পেটে শাবল ঢুকিয়ে ভুঁড়ি বের করে দিব।‍‍` এছাড়াও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন সহ জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম উজ্জ্বল তার স্ত্রীর সাথে কথা বললে তারা বলেন, ‍‍`ওরা আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। আমি ঘরে ছিলাম, আমার ছেলের চিৎকার চেঁচামেচিতে বের হয়ে দেখি তিনজন মিলে নিচে ফেলে এলোপাথারি মারছে। আমি দৌড়ে এসে দেখছি শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করতে গেলে আমার ছেলে হাত দিয়ে বাঁধা দিতে চেষ্টা করলে শাবলের আঘাতে আমার ছেলের হাত ভেঙে যায়। এ সময় আমার ছেলে হাতের যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকে। আমাদের চিৎকারে আশপাশের মানুষ এসে আমাকে ও আমার ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে গেলে সেখানেও বাধা দিলে পরে আতাইকুলা থানা পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতালে যাই।‍‍`

এ বিষয়ে অভিযোগকারী শহিদুল ইসলাম উজ্জ্বল ও তার ছেলে সাদ বলেন, ‍‍`বিবাদীরা অনেক ক্ষমতাধর ও খারাপ প্রকৃতির লোক। তারা যে কোনো সময় আমার এবং আমার পরিবারের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে, আমি ও আমার পরিবার জানমালের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের নিকট ন্যায়বিচারের দাবি জানাই।‍‍`

থানায় মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী পরিবার বলেন, ‍‍`আমরা চিকিৎসার বন্দোবস্ত করে মামলা করব।‍‍`

এ বিষয়ে প্রতিপক্ষ আলমগীর হোসেন, মো. রেজাউল করিম ও মনজুরুল হকের বক্তব্য নিতে গেলে তারা জোর গলায় বলেন, ‍‍`ভাই, অনেক সহ্য করেছি, ওদের দেখে নিব, আপনারা সাথে থাকেন, তাতে কোনো কিছু লাগলে আমরা করব।‍‍` এতে সাংবাদিকরা রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‍‍`যা পারেন করেন, আমরা তো দেখি। হয় আমরা থাকবো, নয়তো ওরা এই গ্রামে থাকবে।‍‍`

এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী বলেন, ‍‍`যারা হামলা করেছে তারা দুষ্টু প্রকৃতির লোক, যে দল যখন ক্ষমতায় আসে, সে দলের দালালি করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব করে আসছে।‍‍`

আতাইকুলা থানার ওসি এ কে এম হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‍‍`আমরা বাংলাদেশ পুলিশের জরুরি সেবায় কল পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং দুই পক্ষকে শান্ত করে ফিরে আসি। পরক্ষণে আবার অভিযোগ পাই, সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমতাবস্থায় আমার ফোর্স পাঠিয়ে এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে তাদের সাথে কথা বলে শান্ত করেছি। দুইজন আহত হয়েছেন, তাদের পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।‍‍`

ইএইচ

Link copied!