Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫,

ধর্ম উপদেষ্টা

মানুষ নামাজমুখী হলে সমাজের অপরাধ প্রবণতা কমে যায়

আবদুল হালিম, কক্সবাজার

আবদুল হালিম, কক্সবাজার

ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০২:৩৪ পিএম


মানুষ নামাজমুখী হলে সমাজের অপরাধ প্রবণতা কমে যায়

মানুষ নামাজমুখী হলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে যায় বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।

সোমবার সকালে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া বাজারে নবনির্মিত উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মসজিদ একটি পবিত্র এবং উত্তম স্থান। যত বেশি মসজিদ নির্মিত হবে, তত বেশি মুসল্লী তৈরি হবে। মানুষ যত বেশি নামাজের দিকে ধাবিত হবে, সমাজ তত বেশি অপরাধমুক্ত হবে। নামাজ মানুষকে সব ধরনের গর্হিত কাজ থেকে দূরে রাখে। মুসল্লিবিহীন মসজিদ কেয়ামতের লক্ষণ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি মসজিদকে আবাদ রাখতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।

মডেল মসজিদের মাধ্যমে দেশে ইসলামী আবহ সৃষ্টি হচ্ছে এবং এতে ধর্ম পালনের ঐতিহ্য আরও বেগবান হবে। পাশাপাশি মানুষের নৈতিকতার উজ্জীবন ঘটবে।

ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, মডেল মসজিদকে কেন্দ্র করে বিশাল কর্মযজ্ঞ আবর্তিত হবে। ধর্মীয় মূল্যবোধ, ইসলামী সংস্কৃতির বিকাশ এবং ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় মডেল মসজিদ অনন্য ভূমিকা রাখবে। এই মসজিদ থেকেই সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যের বার্তা ছড়িয়ে পড়বে। তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষায় সকলকে সোচ্চার হওয়ার অনুরোধ করেন।

ড. খালিদ বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যপূর্ণ দেশ। এ দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে সকল ধর্মের মানুষের অবদান রয়েছে। তিনি বৈষম্যহীন দেশ গড়ে তুলতে দুর্নীতির মানসিকতা পরিহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

পেকুয়া উপজেলা মডেল মসজিদটি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন যৌথভাবে নির্মাণ করেছে। "প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন (২য় পর্যায়)" শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই তিনতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে।

গণপূর্ত অধিদপ্তর এটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। স্থাপনাটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৪ কোটি ৬৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এ মডেল মসজিদে একসাথে ১ হাজার মুসল্লী নামাজ আদায় করতে পারবে। এর মধ্যে মহিলাদের জন্য আলাদা প্রবেশপথসহ নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।

এ মসজিদে পুরুষ, মহিলা, অক্ষম ও বয়স্কদের জন্য ওযু ও নামাজ আদায়ের সুব্যবস্থা রয়েছে। এখানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিসসহ ইমাম প্রশিক্ষণ, হজযাত্রী নিবন্ধন, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, অটিজম কর্নার, এতিমখানা, মৃতদেহ গোসল, ইসলামিক লাইব্রেরি এবং ইসলামি বই বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে।

এছাড়া, এখানে সংশ্লিষ্ট মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমের আবাসন ব্যবস্থা, গেস্ট রুম, কনফারেন্স রুম এবং গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এ প্রকল্পের অধীনে ইতোমধ্যে ছয়টি পর্যায়ে নির্মাণকাজ শেষে মোট ৩০০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে। চলতি মাসে পেকুয়া উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ সারাদেশে মোট ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন মহাপরিচালক আব্দুস ছালাম খান, চট্টগ্রাম গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী একিউএম শাহজালাল মজুমদার, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান হোসাইন সজীব এবং মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ ফেরদৌস-উজ-জামান।

পরে উপদেষ্টা পেকুয়া উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনের ফলক উন্মোচন করেন এবং সেখানে মোনাজাতে অংশ নেন।

ইএইচ

Link copied!