রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০৩:৩০ পিএম
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০৩:৩০ পিএম
ফাল্গুন মাসে তিস্তা নদীতে হাঁটুজল থাকে। বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি ও ভাঙনে সর্বশান্ত করা তিস্তা এখন মরা নদী।
নেই পানির প্রবাহ, শুধু ধুধু বালুচর। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন আয়োজিত দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার দুপুরে রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাট তিস্তার তীরে প্লেকার্ড কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন কিশোর হাঁটুজল পাড়ি দিয়ে প্লেকার্ড হাতে এক তীর থেকে অপর তীর পৌঁছে যায়। সেখানেই দেখা মিলে এ দৃশ্যের। কিশোররা বলেন, বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে তিস্তা নদী পরিপূর্ণ থাকে।
বর্ষা মৌসুম অতিরিক্ত হলে দেখা যায় পানিশূন্যতা।
কিশোর লাভলু মিয়া বলেন, "এর চেয়ে পুকুরে বেশি পানি থাকে। নদীতে কোথাও হাঁটুজল, কোথাও একবুক। এর চেয়ে পুকুরেও বেশি পানি থাকে।"
প্লেকার্ড কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন জেলা সমন্বয়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা `আমার সংবাদ`কে বলেন, "আমরা আজকের যে তিস্তা নদীর পানির দৃশ্য দেখলাম, এটি হলো বাস্তব তিস্তার অবস্থা। এ অবস্থান থেকে উত্তরণের জন্য আন্দোলন করে ন্যায্য হিস্যার পানি আদায় করা, অর্থাৎ আমাদের যে উজানের সরকার, তাদেরকে বাধ্য করা যেন আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা পাই, সেকারণে আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি। আমরা মনে করি, এ আন্দোলন নিশ্চয়ই সফল হবে। আগে যারা ছিলো, তারা তাবেদার সরকার, তারা ভারতকে খুশি করার জন্য যা করার দরকার তাই করত, এবং ভারত যখন বলত পানি ন্যায্য হিস্যার যে স্মারক চুক্তি ছিলো তা এখন আর হবে না, তখন তারা জলকপাট বন্ধ করে রাখত। আজকের এই সরকারের কাছে দাবি, তিস্তার বাম তীরটায় খনন কার্যক্রম কমপ্লিট করে নদীর প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তৎসঙ্গে যতক্ষণ পর্যন্ত ন্যায্য হিস্যা ও মহাপরিকল্পনা কিংবা মেগাপ্রকল্প সফল না হয়, ততক্ষণ আমরা আমাদের এই আন্দোলন সংগ্রাম চলবেই, প্রয়োজনে আমরা বর্ডারের কাছে গিয়ে মানববন্ধন কিংবা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করব।"
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সমন্বয়ক আনিসুর রহমান বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা নদী ভারতের কাছ থেকে পানি বঞ্চিত হয়ে আসছে। ভারত পানি দিয়ে অসময়ে কৃষকের ফসল ভাসিয়ে দেয়, অথচ এখন তিস্তা পানিশূন্য প্রায়। তিস্তা ন্যায্য হিস্যার পানি আদায় ও মেগাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা না হলে, প্রধান সমন্বয়কের নেতৃত্বে জোরালো আন্দোলনের মাধ্যমে অধিকার আদায় করা হবে।"
ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য প্রফেসর রুম্মান হোসেন রুমান বলেন, "তিস্তা নদীতে ন্যায্য হিস্যার পানি প্রবাহের অভাবে হুমকির মুখে কৃষি ও জীববৈচিত্র্য। তিস্তা ন্যায্য হিস্যার পানি প্রবাহের অভাবে পানির লেয়ার অনেক নিচে চলে যায়, এতে করে টিউবওয়েল থেকে পানি আহরণে অনেক কষ্ট হয়। পানি না থাকায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ।"
ইএইচ