Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫,

বরিশালে নিষিদ্ধ পলিথিন নিলামে বিক্রিতে অনিয়ম

বরিশাল ব্যুরো:

বরিশাল ব্যুরো:

ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫, ০২:২৯ পিএম


বরিশালে নিষিদ্ধ পলিথিন নিলামে বিক্রিতে অনিয়ম

সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন সরকারিভাবে উন্মুক্ত নিলামের বিক্রির নিয়ম থাকলেও নিয়মনীতি না মেনেই মালিকের নিকট হস্তান্তরের অভিযোগ উঠেছে বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

উন্মুক্ত ভাবে নিলাম এবং জব্দকৃত পলিথিন কেটে নষ্ট না করে গোপনে বিক্রি করেন তারা। পরে নিলামে পাওয়া ঠিকাদার রাতে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতার সন্দেহ হলে তারা ট্রাকটি আটক করেন। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কর্মকর্তাদের ও ঠিকাদারের নাটকীয় শেষে ম্যাজিস্ট্রেটের হস্তক্ষেপে নিলামের বিক্রি পলিথিন কিছুটা কাটা হয়েছে।

নিষিদ্ধ পলিথিন কেটে নষ্ট না করে নিলামে বিক্রি করার চেষ্টার ঘটনাটি নিয়ে এলাকাজুড়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে জব্দকৃত নিষিদ্ধ পলিথিনগুলো কেটে ব্যবহারের অনুপযোগী করে উন্মুক্ত ভাবে নিলামের মাধ্যমে প্রাপ্ত ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করার কথা থাকলেও সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই কার্যক্রম সম্পন্ন করার চেষ্টা করেছিলো বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর। পরে স্থানীয় জনতার তোপের মুখে পরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট এর উপস্থিতিতে কিছু পলিথিন কেটে ব্যবহারের অনুপযোগী করা হয়। এবং রাত বেশি হওয়ার কারণে বাকি গুলো বস্তায় থেকে যায়।

অন্যদিকে একাধিক স্থানীয়র অভিযোগ প্রশাসন,সেনাবাহিনী ও সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পরে গভীর রাতে কিছু আস্ত পলিথিন পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বের করে নিয়েছে নিলামে পাওয়া ঠিকাদার বশির।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) রাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হওয়া প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহজালাল প্যাকেজিং এন্ড প্রিন্টিং স্বত্বাধিকারী মো. বসির উল্লাহ ফরাজি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পলিথিন কাটার নামে আস্ত পলিথিনগুলো নতুন করে বস্তায় ভরে সেগুলো নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিলো।

শুধু তাই নয় পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সাংবাদিক দেখেই তাদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়ার কৌশল চালান।  

এমন ঘটনার খবরে সেখানে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকরা ভিডিও ধারনের চেষ্টা করলে ক্যামেরা দেখে তাদের উপর ক্ষিপ্ত হন ঠিকাদার মো.বসির উল্লাহ। এরপর পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় এবিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য ঠিকাদার মো.বসির উল্লাহ স্থানীয় পত্রিকার কিছু সাংবাদিকদের এবং একটি রাজনৈতিক দলের নামধারী একটি চক্রকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময় ম্যানেজ করেন।

এছাড়াও ঠিকাদার বসির উল্লাহ দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রামে নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবসা করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

নিলামে বিক্রি জব্দকৃত পলিথিন উন্মুক্ত ভাবে না কেটে তার গোপনে কি ভাবে বাহিরে গিয়েছিলো তা জানতে চাইলে পরিবেশে অধিদপ্তর বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দীন বলেন, নিলামে বিক্রি করা পলিথিন কেটে নষ্ট করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতা ভুল বুঝে ট্রাকটি আটক করেন। এনিয়ে একটু ঝমেলা সৃষ্টি হলে প্রশাসন এসে বিষয়টি দেখে সমাধান করেন।

তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট বর্তমানে উপস্থিত রয়েছে তার সামনেই নিষিদ্ধ পলিথিন কাটা হচ্ছে। তবে স্থানীয়রা যে অভিযোগ তুলেছেন তা ভুল। পরে তারা বিষয়টি দেখার পরে চলে যায়।

নিষিদ্ধ পলিথিন নিলামে কেনার পরে কেটে নষ্ট না করে কীভাবে ট্রাকে করে বাহিরে নিয়ে গিয়েছিলেন জানতে চাইলে ঠিকাদার বসির উল্লাহ সঠিক কোন উত্তর না দিয়ে সাংবাদিকদের ম্যানেজের মিশনে নামে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিলামের জন্য গঠিত কমিটির দায়িত্বে থাকা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, মাল বাহিরে বের না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে আমি কোন প্রশ্নের জবাব দিতে পারবো না। গেটের বাহিরে যাওয়ার পর যদি কাটা ছাড়া পলিথিন পাওয়া যায় সেটার দায়ভার আমাদের।

বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম (চলতি দায়িত্ব) কাছে জানতে চাইলে ঠিকাদারের পক্ষে সাফাই গেয়ে তিনি বলেন, পলিথিন কাটার সময় দুই একটা বান্ডেল ভেতরে আস্ত থাকতে পারে, তবে ঘটনাটি শোনার পর সবগুলো বস্তা পুনরায় খুলে কাটার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।

বিআরইউ

Link copied!