Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫,

মাগুরা সদর হাসপাতালে খাবারের মানে ইতিবাচক পরিবর্তন

মাগুরা প্রতিনিধি

মাগুরা প্রতিনিধি

ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম


মাগুরা সদর হাসপাতালে খাবারের মানে ইতিবাচক পরিবর্তন

সময়ের সাথে মাগুরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মানও উন্নত হচ্ছে। নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি খাবারের মান উন্নয়নেও বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে।

রোগীদের দেওয়া খাবার নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল। তবে এবার বিভিন্ন পরিকল্পনা ও নির্দেশিত নীতিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে খাবারের মানোন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফলে খাবারের মান উন্নত হয়েছে। রোগীরা এই মানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার দাবি জানিয়েছেন।

প্রতিদিন ২৩৬-২৪০ জন রোগীর জন্য উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিনই খাবারের মান যাচাই করার ফলে রোগীরা পাচ্ছেন তাজা ও পরিচ্ছন্ন খাবার।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সদর হাসপাতালের রোগীদের খাদ্য সরবরাহ করতে টেন্ডারের মাধ্যমে নাহার এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পেয়েছে।

তাদের খাদ্য তালিকা অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে শনিবার, বুধবার, শুক্রবার, মঙ্গলবার ও সোমবার দু’বেলা মাছ পরিবেশন করা হয়। রোববার ও বৃহস্পতিবার দেওয়া হয় মাংস।

প্রতিদিন সকালের নাস্তায় কলা, রুটি ও ডিম সরবরাহ করা হচ্ছে।

সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক জাহিদ আমার সংবাদকে জানান, বাজারে সতেজ সবজি ও তাজা মাছ পর্যাপ্ত থাকায় খাবার সরবরাহে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, “আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি রোগীদের সন্তুষ্ট করতে এবং সুস্বাদু ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার পরিবেশন করতে। এ ধারাবাহিকতা আমরা অব্যাহত রাখব।”

গাইনী ওয়ার্ডের আসমা খাতুন জানান, “আজ গাইনী ওয়ার্ডে ১৫টি বেডের মধ্যে ১২টি বেডের রোগীদের খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। ৩টি বেডের রোগী হাসপাতালের সেবা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। বেডের বাইরের রোগীদেরও যদি কেউ খাবার দেয়, ভালো হয়।”

শিশু ওয়ার্ডের রোগীর মা জাহানারা বেগম ও মহিলা ওয়ার্ডের রাশেদা আক্তার বলেন, “আগেও রোগী নিয়ে কয়েকবার হাসপাতালে থেকেছি। খাবারের অবস্থা ভালো ছিল না, বিশেষ করে মাংস ও ডালের মান খুবই খারাপ ছিল। কিন্তু কয়েকদিন ধরে যে খাবার দেওয়া হচ্ছে, তা খুবই ভালো। বিশেষ করে মাছ ও সবজিতে মসলা দেওয়া হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। রোগীরা বাড়ি থেকে খাবার আনা বন্ধ করে দিয়েছেন, কারণ হাসপাতালের দেওয়া খাবার ভালো লাগছে।”

তবে স্থানীয় রোগীরা অভিযোগ করেছেন, শুধুমাত্র রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবার তাদের স্বজনরা পান না। এছাড়া ফ্লোরে থাকা রোগীরাও খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

মাগুরা সদর হাসপাতালের খাদ্যের দায়িত্বে থাকা স্টোয়ার্ড মো. কামরুজ্জামান বলেন, “নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভালোভাবে শুরু করেছে। আগে খাবারে মাছ ও মাংস তেমন ছিল না, কিন্তু এখন মাছ ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করায় বৈচিত্র্য এসেছে। রোগীরা খেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে এই মানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা প্রয়োজন।”

মাগুরা সদর হাসপাতালের আরএমও মামুনুর রশীদ বলেন, “নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান নাহার এন্টারপ্রাইজ খাবারের মান উন্নত করেছে এবং খাবারে বৈচিত্র্য এনেছে। তবে এটি যেন কয়েকদিন ভালো দিয়ে মান নিম্নগামী না হয়, সে বিষয়ে আমাদের নজর থাকবে। রোগীদের মানসম্মত খাবার পরিবেশনে যথাযথ নিয়ম মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”

মাগুরা সদর হাসপাতালের রোগীদের খাবারের মান নিয়ে দীর্ঘদিনের দুর্নাম ঘোচাতে এবং এই মান বজায় রাখতে তদারকির ওপর জোর দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইএইচ

Link copied!