শেখ মিহাদ, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, ১১:৪৮ এএম
শেখ মিহাদ, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, ১১:৪৮ এএম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়নের মালাই গ্রামের বসতবাড়ি ও মাদরাসা সংলগ্ন কৃষি জমি ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় মালাই তালীমুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ মাদ্রাসার সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, শাহিদা আক্তার, হোসনা বেগমসহ অন্যান্যরা প্রশাসনের কাছে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারী ব্যক্তিরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক, নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নবীনগর উপজেলা ভূমি অফিস, নবীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করার জন্য অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, স্থানীয় প্রভাবশালী মনির হোসেন চৌধুরী ও শোয়েব চৌধুরী ভেকু ও ড্রেজার দিয়ে আশপাশের একাধিক কৃষি জমি কেটে মাটি বিক্রি করছেন। তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে এসব কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
রফিকুল ইসলাম জানান, মালাই গ্রামের তিন ফসলি জমিতে ড্রেজার দিয়ে গর্ত খুঁড়ে মাটি বিক্রি করায় আশপাশের মাদ্রাসা ও বসতবাড়ি ঝুঁকিতে রয়েছে। যেকোনো সময় ড্রেজিংয়ের গর্তে বসতবাড়ি ও মাদ্রাসা ভেঙে পড়তে পারে। বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা রাতের আঁধারে ড্রেজার দিয়ে বিশাল গর্ত খুঁড়ছে। বাধা দিলে তারা অকথ্য গালাগালি ও মারপিটের চেষ্টা করে।
শাহিদা আক্তার জানান, বেশ কয়েকবার স্থানীয় ভূমি অফিসে মৌখিক অভিযোগ করেও কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তারা সরেজমিনে এসে ঘুরে চলে যায়। স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাড়িতে ভয় নিয়ে থাকেন, কখন কী ঘটবে—এমন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।
মৃত মাইনু উদ্দিনের স্ত্রী হোসনা বেগম বলেন, “আমার স্বামী নেই, তাদের বাধা দিলে উল্টো হুমকি দেয়। প্রশাসনের লোক আসলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয় না। প্রশাসন চলে যাওয়ার পর আবার মাটি কাটার কাজ শুরু করে। দেশে কি কোনো আইন নেই?”
৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার কাদের চৌধুরী বলেন, “অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার ফলে মাদ্রাসা ও বসতবাড়ি গর্তে পড়তে পারে এবং লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হতে পারে। আমরা সচেতন মানুষ হিসেবে বারবার বলার পরও তারা পাত্তা দিচ্ছে না। তারা কার শক্তিতে এগুলো করছে, বুঝি না।”
স্থানীয় বাসিন্দা কিবরিয়া বলেন, “অনেক দিন ধরে তারা মাটি কাটার চেষ্টা করছিল, এখন হঠাৎ করে কীভাবে তারা কাজ শুরু করেছে, জানি না।”
অভিযুক্ত শোয়েব চৌধুরী বলেন, “আমি কলেজ শাখার ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি, বর্তমানে ইউনিয়নের যুবদলের নেতা, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী। আমি যেভাবেই হোক, কাজ করবই। এখানে কারো বাধাই কাজে আসবে না।”
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব চৌধুরী বলেন, “আমি সরেজমিনে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়ে এসেছি। যদি তারা কাজ করে থাকে, তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।”
ইএইচ