মাগুরা প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, ১২:২৪ পিএম
মাগুরা প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, ১২:২৪ পিএম
ফুটফুটে ছেলেসন্তান ও স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক জড়িয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে বাসায় তুলেছেন এক পুলিশ সদস্য।
বর্তমানে ১৭ মাস বয়সী পুত্র সন্তান (ফারবি রাফান) ও স্ত্রী তাদের অধিকারের জন্য পুলিশের বিভিন্ন দপ্তর ও আদালতে অভিযোগ দিলেও এখনো অধিকার ফিরে পাননি।
জানা যায়, মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার কাজলী গ্রামের আবু ফয়েজ মোহাম্মদ সিদ্দিকের ছেলে পুলিশ সদস্য ফয়সাল আহমেদ রাব্বির সঙ্গে ২০২১ সালে টুপিপড়া গ্রামের মুক্তা খানের প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে বিয়ে হয়। পারিবারিকভাবে ইসলামের শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পাঁচ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে বিবাহ হয়।
বিয়ের পর মুক্তা খানের পরিবার থেকে রাব্বিকে স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্র ও নগদ টাকাও দেওয়া হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর তাদের ফারবি রাফান নামের একটি ছেলেসন্তান জন্ম নেয়। বিয়ের পর সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। কিন্তু সেই সুখের সংসারে অভিশাপ হয়ে উঠে নড়াইল সদরের শংকরপুর গ্রামের জাফর মোল্লার মেয়ে মোছা. উর্মি খানম।
বদলিজনিত কারণে ফয়সাল আহম্মেদ রাব্বি (বাংলাদেশ পুলিশে কনস্টেবল পদে নড়াইল জেলা পরে বাগেরহাট কর্মরত বিপি নং-১৮১৮২১৮-৩৪৪ এবং কনস্টেবল নং-১৪৩৮) উর্মি খানমের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রী মুক্তা খান ও ছেলে ফারবি রাফানকে তাড়িয়ে দিতে শুরু হয় নির্যাতন।
শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের পরও মুক্তা খান তাকে ছেড়ে না আসায় যৌতুক দাবি করেন রাব্বি। এর একপর্যায়ে প্রায় নব্বই হাজার টাকা গ্রহণ করেন রাব্বি। পরে টাকার চাহিদা বৃদ্ধি পেলে এ নিয়ে উভয় পরিবারের মাঝে অশান্তি শুরু হয়।
বিবাহের পর ৩ (তিন) মাস পর উর্মি খানমের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে ২০২১ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন পুলিশ কনস্টেবল রাব্বি। শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনে ১৭ মাসের শিশু সন্তানসহ স্ত্রীকে নিজের বসতবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। নিরুপায় হয়ে মেয়েটি অসুস্থ পিতার বসতবাড়িতে অবস্থান নেয়। তাদের তাড়িয়ে দিয়ে পরকীয়া প্রেমিকাকে বিয়ে করে বাসায় তুলেছেন রাব্বি।
এদিকে স্বামী ও সন্তানের অধিকার ফিরে পেতে অসহায় মুক্তা খান বাগেরহাট পুলিশ সুপার, ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীপুর আমলী আদালত মাগুরা, বরাবর অভিযোগ দিলেও আজও বিচার পাননি।
ভুক্তভোগী মুক্তা খান বলেন, ‘আমি আমার অধিকার ফিরে পেতে চাই। আমার সন্তানের অধিকার ফিরে পেতে চাই। আমার স্বামী আমাকে রেখে অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করে বিয়ে করেছেন। আর আমার ও আমার ছেলেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন সদস্য হয়ে এমন কাজ করলেন তিনি। আমি বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে পুলিশ সদস্য রাব্বি বলেন, ‘মুক্তা খান আমার নামে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, এটা নিয়ে আর কি হবে, এর আগেও একবার এই সমস্যায় পড়ে ছিলাম। যে যা করার করুক সমস্যা নেই।’
এ বিষয়ে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল আরিফ বলেন, ‘পুলিশ কনস্টেবল রাব্বির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর এটা জেনেই ওই পুলিশ কনস্টেবল পলাতক রয়েছে।’
ইএইচ