Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫,

রাজবাড়ীতে দীর্ঘদিন পর বিএনপির দুই গ্রুপের ঐক্যবদ্ধ সমাবেশ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম


রাজবাড়ীতে দীর্ঘদিন পর বিএনপির দুই গ্রুপের ঐক্যবদ্ধ সমাবেশ

বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু বলেছেন, ৫ আগস্টের আগে সংস্কার করতে চেয়েছিল বিএনপি। সংস্কার আন্দোলনের মহানায়ক তারেক রহমান। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। 

রবিবার বিকেলে শহরের ঐতিহাসিক আজাদী ময়দানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি সহনীয় রাখা, অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা ও তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ঘোষিত রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা কালে এসব কথা বলেন।  

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. লিয়াকত আলী বাবুর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন, বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিএনপির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ-সভাপতি অ্যাড. মো. আসলাম মিয়া, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. কামরুল আলম, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন-অর রশীদ হারুন, বগুড়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রুমিন, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নঈম আনসারী, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল আলম দুলাল, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও রাজবাড়ী পৌর বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী আহসান হাবিব, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. কেএ বারী, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম মিয়া, পাংশা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চাঁদ আলী খান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম শিকদার পিন্টু ও আকমল হোসেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে দুরে বসে ষড়যন্ত্র করছে। ৫ আগস্টের আগে সংস্কার করতে চেয়েছিল বিএনপি। সংস্কার আন্দোলনের মহানায়ক তারেক রহমান। পতিত সরকারের কোনো নেতা যদি নতুন দলে যোগ দেয় তাহলে বিএনপি তাদের ছাড় দেবে না। যদি আবার স্বেরাচার গোষ্টি মাঠে নামতে চায়, তাদেরকে এদেশ থেকে বিদায় করা হবে। মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে, মানুষকে ভালো বাসতে হবে। বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ছাত্রদলের উপর মানুষ যেন আস্থা না হারায়। আজ যেমন এক সাথে সমাবেশ করছেন এ ভাবে থাকতে হবে। দেশে অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে সংস্কার করা সম্ভব নয়। এ কারণে দ্রুত সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। রাজবাড়ীবাসী দু’টি আসন ধানের শীষের জন্য উপহার দিবেন।

প্রধান বক্তা হিসেবে বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, আমরা জিয়ার সৈনিক, আমরা খালেদা জিয়ার সৈনিক, আমরা তারেক রহমানের হাতিয়ার। রাজবাড়ী বিএনপিতে কোন ভেদাভেদ ও বিভেদ নাই। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে দ্রব্যমূল্যের দাম কমেনি, দুর্নীতি বন্ধ হয়নি, ধর্ষণ, ডাকাতি হচ্ছে। ইউনুস সাহেব কোনো সংস্কার করতে পারেন নাই। যদি নতুন বাংলাদেশ বির্নিমান করতে হয়, তাহলে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। এদেশের জনগণ একবেলা ঠিক মতো খেতে পারে না, আর শেখ হাসিনার মন্ত্রী, এমপিরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। ক্ষমতার জন্য জিয়া পরিবার রাজনীতি করে না। তাহলে তারেক রহমান বলতেন না ২ বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। এ কারণে তারেক রহমান বলেছেন জনগণের পাশে থাকতে। কেউ চাঁদাবাজি করলে পুলিশে ধরিয়ে দিবেন। বিএনপি জনগণের দল এ কারণে সব সময় দেশের মানুষের পাশে থেকেছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া দ্বিতীয় পদ্মা সেতু হবে। আমরা ভোট দিতে পারে নাই, আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে চাই। সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরে আসে এ জন্য আমরা মাঠে থাকবো।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক বলেন, আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ বিএনপি। আজ থেকে রাজবাড়ী জেলা বিএনপি সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধতা প্রমাণ করবে। আগামীতে তারেক রহমানের রাজবাড়ীর দু’টি আসন উপহার দিতে পারেন, তাহলে সকল উন্নয়ন সম্ভব হবে। বেগম খালেদা জিয়া পরিবারের দিকে না তাকিয়ে দেশের জনগণের কথা ভেবে কোনো আপস করেনি। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫টি জেলা ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আমরা চাই না।

বক্তারা বলেন, রাজবাড়ী জেলা বিএনপি ঐক্যবদ্ধভাবে সমাবেশ করছে। আগামী দিনে রাজবাড়ীর দু’টি আসনে যে মনোনয়ন পাবে আমরা তাদের পক্ষে কাজ করবো। কোনো প্রকার বিরোধ সৃষ্টি না করতে অনুরোধ করেন। রাজবাড়ীতে জিল্লুল হাকিম, কাজী কেরামত আলী, কাজী ইরাদত আলী বিগত ১৭ বছর বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। তাঁদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। শেখ হাসিনার সাথে তারাও এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। পদ্মা নদীতে ব্যারেজ নির্মাণের জন্য নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামতে হবে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে পদ্মা ব্রিজের জন্য আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য মাঠে থাকতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হতে দিবো না। এ সরকারের কাজ একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন। বিগত ১৭ বছর ভোট বিহীন সরকার ছিল। আগামীতে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করবো।  

এসময় জেলা, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন বিএনপি সহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

আরএস
 

Link copied!