Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ০৯ মার্চ, ২০২৫,

এবার গ্রাম্য সালিশে ধর্ষকের দেড় লাখ টাকা জরিমানা

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

মার্চ ৮, ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম


এবার গ্রাম্য সালিশে ধর্ষকের দেড় লাখ টাকা জরিমানা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নানির বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মাদরাসা শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি উপজেলার আজগানা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ওই শিশু ও তার পরিবারের লোকজন ভয়ে মুখ না খুললেও ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মাতাব্বররা গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করে।

সালিশে ধর্ষককে জরিমানা করা হয় দেড় লাখ টাকা। এরমধ্যে ৯২ হাজার টাকা দিলেও এখনো বাকি রয়েছে ৫৮ হাজার টাকা।

খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে পুলিশ ভুক্তভোগী শিশু ও তার মাকে থানায় নিয়ে এসে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

জানা যায়, ঘটনার দিন ধর্ষক সিএনজি চালক উপজেলার আজগানা ইউনিয়নের কুড়িপাড়া গ্রামের নওশের মিয়ার ছেলে ফিরোজ মিয়া শিশুটি নানির বাড়ির কাছে জমিতে সার দিচ্ছিলো। ওই জমির সাথেই শিশুটি বড়ই গাছ থেকে বড়ই পারছিল। তখন ফিরোজ মিয়া শিশুটিকে ডেকে নিয়ে একটি টয়লেটের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের কথা কাউকে বললে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় শিশুটিকে। ফিরোজের ডাকার শব্দ শিশুটির মা শুনেছিলেন। ঘটনার পর বাড়িতে গিয়ে শিশুটি চুপচাপ থাকায় তাকে জিজ্ঞেস করা হলেও কিছু বলছিল না। বারবার জিজ্ঞেস করায় এক পর্যায়ে কান্না করে পুরো ঘটনা মাকে খুলে বলে ভুক্তভোগী শিশু।

পরে সময় পর হওয়ার সাথে সাথে পাড়া প্রতিবেশীরা ঘটনা জেনে যায়। এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মালেক, বাবুল ও ফাজুসহ কয়েকজন মাতাব্বর ঘটনার সপ্তাহখানেক পর গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করেন। সালিশে ধর্ষক ফিরোজকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। গ্রাম্য মাতাব্বরদের চাপে সালিশ মেনে নিলেও জরিমানার ৫৮ হাজার টাকা এখনো বাকি রয়ে গেছে বলে শিশুটির মা জানান।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে ধর্ষককে আটক করতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। ধর্ষক ফিরোজ কয়েকদিন আগেই এলাকা থেকে পালিয়েছে বলে জানা গেছে।

শনিবার দুপুরে পুলিশ ভুক্তভোগী শিশু ও তার মাকে থানায় নিয়ে এসেছেন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটির মা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বলে জানা গেছে।

শিশুটির মা জানান, তার স্বামী সৌদিআরব প্রবাসী। এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে বাড়িতে থাকে। ঘটনার কথা ভয়ে প্রকাশ করতে পারি নাই। তবু জানাজানি হয়ে গেছে। আমাদের পাশে দাঁড়ানোর মত কোন অভিভাবক নেই। গ্রামের মাতাব্বদের কারণে সালিশ মেনে নিয়েছি। মেয়ের বাবাও ঘটনা শুনেছেন। তিনি অপরাধীদের বিচার চেয়েছেন।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর থানার ওসি মোশারফ হোসেন জানান, খবর পাওয়া মাত্রই শুক্রবার রাতভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয় ধর্ষককে ধরতে। একটি মামলা হয়েছে। ধর্ষক ফিরোজকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ইএইচ

Link copied!