ইটনা (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
মার্চ ১০, ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
ইটনা (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
মার্চ ১০, ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
বিশাল হাওড় অঞ্চলের ইটনা উপজেলায় বোরো ধানের সবুজ পাতায় ফুটে উঠছে কৃষকের স্বপ্ন। নয়টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ হাওড়ে এখন সবুজের সমারোহ, চারদিকে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। বসন্তের রোদ-বৃষ্টির খেলায় হাওড়ের জমিতে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে, যা এবার বোরো ধানের সম্ভাবনাময় ফলনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার বিস্তীর্ণ হাওড়জুড়ে এখন দৃষ্টিনন্দন বোরো ক্ষেত নজর কেড়েছে। কৃষকরা আশাবাদী, এ বছর বোরো ধানের ফলন গত বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। মাঠে দোল খাচ্ছে সবুজ ধানের পাতা, কৃষকের মনে জাগছে আনন্দের আমেজ। আর কিছুদিনের মধ্যেই সোনালি শীষে ভরে উঠবে মাঠের পর মাঠ, কৃষকের গোলায় উঠবে আশানুরূপ ফসল।
ইটনা উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে নয়টি ইউনিয়নে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ হাজার হেক্টর জমি। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ইটনা সদর, আরুরা মজলিশপুর, কলমার বিশাল হাওড়, বর্শিকুড়া, জুড়াকাটা, আঙ্গারের হাওড়সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বিস্তীর্ণ বোরো ক্ষেত সবুজে ছেয়ে গেছে।
এ বছর কৃষকরা হাইব্রিড হীরা, বিআর-২৮, বিআর-২৯, ব্র্যাক সিড, জনক রাজসহ উন্নত জাতের ধানের চারা রোপণ করেছেন। পাওয়ার পাম্পের মাধ্যমে সেচ দেওয়ায় উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি হলেও কৃষকরা আশাবাদী, ফসল উত্তোলনের পর ভালো লাভ করতে পারবেন।
ইটনা সদর উদিয়ারপাড় গ্রামের কৃষক মালেক মিয়া বলেন, “আমি দশ একর জমিতে উন্নত জাতের ধান চাষ করেছি, ফলন বেশ ভালো হয়েছে।” চিপাহাটির কৃষক ছাত্তার মিয়া বলেন, “আমার পাঁচ একর জমিতে হাইব্রিড ধানের চারা রোপণ করেছি, ফসল দেখে মন ভরে যাচ্ছে।” দিঘীরপাড় গ্রামের কৃষক মজিদ মিয়া জানান, “কৃষি অফিসের পরামর্শে উন্নত চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করেছি, আশা করছি এবার প্রচুর ধান ঘরে তুলতে পারব।”
পরিবেশ অনুকূলে থাকায় এবার বৃষ্টি কম হলেও ফসলের ক্ষতি হয়নি। ক্ষতিকর পোকামাকড়ের আক্রমণও তুলনামূলক কম, ফলে ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকরা মনে করছেন, এ বছর উৎপাদিত ধান নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ফসল বাজারজাত করতে পারবেন।
এবারের বোরো মৌসুম শুধু ফসল উৎপাদনের নয়, হাজারো কৃষকের স্বপ্ন বাস্তবায়নের এক গুরুত্বপূর্ণ সময় হয়ে উঠেছে। ইটনার হাওড়ে এখন কেবল সবুজ নয়, কৃষকের মুখে হাসির আলোও ছড়িয়ে পড়েছে।
ইএইচ