অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
মার্চ ১৩, ২০২৫, ১২:২০ পিএম
অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
মার্চ ১৩, ২০২৫, ১২:২০ পিএম
যশোরের অভয়নগরে পৃথক স্থানে পুকুরের পানিতে ডুবে রুকসানা (১০) ও দেড় বছর বয়সী আরিয়ান হোসেন নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে, কর্তব্যরত চিকিৎসকের অবহেলায় রুকসানার মৃত্যু হয়েছে বলে নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছেন। ভাঙচুর এড়াতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অতিরিক্ত পুলিশ মোতয়েন করা হয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুর ৩ টার দিকে উপজেলার বুইকারা গ্রামে রুকসানা এবং একইদিন সকাল ১১ টার দিকে উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামে আরিয়ান হোসেন তার নানা বাড়ির পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়। রুকসানা বুইকারা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে। আরিয়ান হোসেন মাগুরা জেলার মাগুরা সদর উপজেলার মিঠাপুকুর গ্রামের মেহেদী হাসানের ছেলে।
রুকসানার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দুপুরে রুকসানা তার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করছিল। এক পর্যায়ে পুকুরের গভীর অংশে রুকসানা তলিয়ে গেলে সহপাঠীরা আমাদের খবর দেয়। তাকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রায় ৩০ মিনিট পর জরুরি বিভাগে আসেন এবং রুকসানাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, সঠিক সময় চিকিৎসক উপস্থিত হলে আমার মেয়ের মৃত্যু হতো না। আজ চিকিৎসকের অবহেলার কারণে আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিচার দাবি করছি।
এদিকে রুকসানার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এদিন বিকালে বুইকারা এলাকাবাসী হাসপাতাল ঘেরাও করে ভাঙচুর ও চিকিৎসককে মারপিটের চেষ্টা করে। এ সময় অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপস্থিত হন। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর হাত থেকে হাসপাতালে ভাঙচুর ও মারপিটের ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতয়েন করেন।
অপরদিকে আরিয়ান হোসেনের নানা সেলিম বিশ্বাস বলেন, সকাল ১১ টার দিকে আরিয়ান আমাদের বাড়ির পাশে আব্দুল হাকিমের পুকুর পাড়ে খেলা করছিল। কিছুক্ষণ পর আমার স্ত্রীর চিৎকারে জানতে পারি আরিয়ান পুকুরে ভাসছে। তাকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলীমুর রাজিব বলেন, পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যুর ঘটনা মর্মান্তিক। চিকিৎসকের অবহেলায় রুকসানা নামে রোগীর মৃত্যু হয়েছে মর্মে অভিযোগ পেয়েছি। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের অবহেলা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আলিম বলেন, দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদেরকে সান্ত্বনা দেবার ভাষা আমার নেই। তারপরও সরকারি হাসপাতাল ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের মারপিট এড়াতে ওসির সহযোগিতায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা হাসপাতালে রয়েছি।
বিআরইউ