Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ১৫ মার্চ, ২০২৫,

ফিশারি ঘাটে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অনিশ্চয়তা, প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম

মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম

মার্চ ১৫, ২০২৫, ০৬:৪৯ পিএম


ফিশারি ঘাটে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অনিশ্চয়তা, প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

চট্টগ্রাম নগরীর প্রধান পাইকারি মাছ বাজার ফিশারি ঘাট দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলদারদের কবলে। এ বাজারে একাধিক অবৈধ স্থাপনা থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি দীর্ঘদিনের হলেও, রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপের কারণে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

ফিশারি ঘাটে প্রতিদিন কোটি টাকার চাঁদাবাজি চলে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অর্থের ভাগ বিভিন্ন মহলে পৌঁছায় বলে জানা যায়। এমনকি মসজিদের নাম ভাঙিয়েও চাঁদার বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা চলে। বিগত সরকারের আমলে সরাসরি রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে উচ্ছেদ সম্ভব হয়নি, তবে বর্তমানেও কেন কার্যক্রম শুরু হচ্ছে না—এ প্রশ্ন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের।

ফিশারি ঘাটের প্রভাবশালী নেতা বাবুল সরকার বর্তমানে আত্মগোপনে থাকলেও, তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী নূর হোসেন ও প্রবীর এখনও সক্রিয় বলে জানা গেছে। তারা আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করে বাজারের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন। বাজার ব্যবস্থাপনায় নতুন করে যুক্ত হয়েছেন মোহাম্মদ আলী নামের এক ব্যক্তি, যার বিরুদ্ধেও নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

ফিশারি ঘাটে অবৈধ স্থাপনা ও চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্টরা জানান, তারা বন্দরের কাছে ভাড়া দেন, এখন জেলা প্রশাসনের কাছে ভাড়া দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে তাদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হবে না বলেও তারা মন্তব্য করেন। চাঁদার টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এই মাছ বাজার দিনে পাইকারি বাজার হলেও রাতে মাদক ও অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। অবৈধ স্থাপনার কারণে কর্ণফুলী নদীর দখলও ক্রমাগত বাড়ছে।

চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান বলেন, "হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী প্রশাসন চাইলে যে কোনো সময় উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও নতুন করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।"

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম আমার সংবাদকে বলেন, "ফিশারি ঘাটের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। এতদিন আইনগত জটিলতার কারণে উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি, তবে অচিরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে প্রশাসনের বিলম্ব এবং সংশ্লিষ্ট মহলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। প্রশাসন আদৌ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

ইএইচ

Link copied!