জাহিদ হাসান, মাদারীপুর
মার্চ ১৫, ২০২৫, ০৮:১৭ পিএম
জাহিদ হাসান, মাদারীপুর
মার্চ ১৫, ২০২৫, ০৮:১৭ পিএম
মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি আল আমিন চৌকিদার বিএনপি নেতাদের সাথে ইফতার করেছেন।
এ ঘটনা জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। পুলিশের খাতায় পলাতক এই আসামি কীভাবে প্রকাশ্যে ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করলেন এবং বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কীভাবে তিনি একত্রে উপস্থিত হলেন, তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকালে মরহুম সাঈদ হাওলাদারের মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয় মরহুম সাঈদ হাওলাদার ফাউন্ডেশন কর্তৃক। আয়োজনে প্রধান ভূমিকা পালন করেন সাঈদ হাওলাদারের চাচাতো ভাই বিএনপি নেতা ও ঠিকাদার লাভলু হাওলাদার।
এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা, এবং সেখানে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত ৮ নং আসামি আল আমিন চৌকিদার, যিনি বর্তমানে পলাতক।
এ ধরণের একটি অনুষ্ঠানে আল আমিনের উপস্থিতি জানাজানি হলে সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলেছে, কীভাবে বিএনপি নেতাদের সাথে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি একত্রে বসে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করতে পারেন। বিশেষ করে, পলাতক আসামি কেন প্রকাশ্যে এমন একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে, কারণ এমন একজন পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার না করা এবং প্রকাশ্যে অংশগ্রহণের বিষয়টি আইনের প্রতি অশুভ ইঙ্গিত দেয়।
ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজক লাভলু হাওলাদার বলেন, “আল আমিন আমার গ্রামের বাড়ির পড়শি। সে হিসাবে সে আমার চাচাতো ভাই। তবে তাকে আমরা দাওয়াত দেইনি। সে কেন এসেছে তাও আমি জানি না। কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক পলাশ হাওলাদারকে দাওয়াতের দায়িত্ব দিয়েছিলাম।”
লাভলু আরও জানান, “আল আমিন মূলত বিএনপি করে। ভিলেজ পলিটিক্সের কারণে আল আমিন রোমান হত্যা মামলার আসামী হয়েছে। এটা খুঁজলেই জানা যাবে।”
এদিকে, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাহান্দার আলী জাহান বলেন, “দলের কেউ যদি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামিকে প্রশ্রয় দেয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি ইফতার পার্টিতে ছিলাম, তবে আল আমিনকে আমি চিনি না। সে যদি হত্যা মামলার আসামি হয়, তাহলে সে কীভাবে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল আমি জানি না। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করবো, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামিদের যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করে।”
মাদারীপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. নেয়ামতউল্লাহ বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি বা ছাত্রলীগ বা আওয়ামী দোষরদের যারা দাওয়াত দেবে বা তাদের নিয়ে অনুষ্ঠান করবে, তারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষের লোক। তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না।”
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, “আমরা বৈষম্যবিরোধী হত্যা মামলার আসামিদের ধরার জন্য চেষ্টা করছি। রোমান হত্যা মামলার আসামি কিভাবে এ ধরণের একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলো, বুঝতে পারছি না। তবে আল আমিনসহ অন্যান্য আসামিসদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।”
ইএইচ