মশিউর রহমান বাবলু, পটুয়াখালী
মার্চ ১৬, ২০২৫, ০২:০৭ পিএম
মশিউর রহমান বাবলু, পটুয়াখালী
মার্চ ১৬, ২০২৫, ০২:০৭ পিএম
পটুয়াখালীতে ধীরে ধীরে তৈলবীজ সূর্যমুখীর চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বাড়লেও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে উপকূলীয় কলাপাড়া উপজেলায় সূর্যমুখী, আলু ও রসুন চাষে এতদিন আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি।
তবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে আমন ধান কাটার পর বিনা চাষে ধান ক্ষেতে আলু, সূর্যমুখী ও রসুনের চাষ করে কৃষকরা ভালো ফলন পাচ্ছেন।
কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কুয়াকাটার খাজুরায় স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে মাঠ দিবসের আয়োজন করা হয়।
এ উপলক্ষে বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত পরিদর্শন করেন কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু জুবায়ের হোসেন বাবলু।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, তাপ ও লবণ সহনশীল জাত ৭২, ৭৩ ও ৭৯ আলুর চাষ করে কৃষকরা বিনা চাষেই হেক্টরপ্রতি ২০-২৫ টন আলু পাচ্ছেন। একইভাবে, রসুনের ফলন হেক্টরপ্রতি ৪-৫ টন এবং `বাড়ি-২` জাতের সূর্যমুখী হেক্টরপ্রতি ১৫০০-১৮০০ কেজি উৎপাদিত হচ্ছে। এতে করে উপকূলীয় অঞ্চলের পরিত্যক্ত জমিতে লাভজনক চাষাবাদ সম্ভব হচ্ছে, যা কৃষকদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে।
কলাপাড়ার খাজুরা গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, "আমন ধান কাটার পর জমি ফাঁকা পড়ে থাকত। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরামর্শে আমি বার্লি চাষ করে ভালো ফল পেয়েছি। এখন নতুন জাতের সূর্যমুখী, আলু ও রসুন চাষে আগ্রহী হয়েছি। অন্যান্য কৃষকরাও এতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।"
মাঠ দিবসের সভাপতিত্ব করেন পটুয়াখালী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এইচ এম খায়রুল বশার। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু জুবায়ের হোসেন বাবলু।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পটুয়াখালীর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. কামরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু জুবায়ের হোসেন বাবলু বলেন, "আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের জমি সাত মাস অনাবাদী থাকে। কিন্তু অন্যান্য জেলার তুলনায় এখানে বিনা চাষেই আলুর ভালো ফলন হচ্ছে। এতে কৃষকের বাড়তি খরচও তেমন নেই। এ বছর আশানুরূপ ফলন হওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। আশা করছি, আগামীতে আরও কৃষক এ পদ্ধতিতে চাষে আগ্রহী হবেন। কৃষি মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে।"
এ বছর প্রকল্পের আওতায় ১২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী, ৫ হেক্টর জমিতে আলু এবং আড়াই হেক্টর জমিতে রসুন বিনা চাষে আবাদ করা হয়েছে।
মাঠ দিবসে প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও প্রযুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রকল্পের ফোকাল পয়েন্ট ড. অপূর্ব কুমার চাকী। সঞ্চালনায় ছিলেন পটুয়াখালী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মাইনুল ইসলাম।
ইএইচ