জাহিদুল ইসলাম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
মার্চ ১৭, ২০২৫, ০৭:২২ পিএম
জাহিদুল ইসলাম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
মার্চ ১৭, ২০২৫, ০৭:২২ পিএম
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় ১টি পৌরসভা, ও ৪ ইউনিয়নে দর্জি দোকানগুলোতে এখন কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে পোশাক তৈরির চাপ বাড়ায় দিন - রাত দিয়ে সেলাই মেশিন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন পোশাকের আনন্দ, নিম্ন আয়ের মানুষের ভরসা স্থানীয় বাজারের দর্জি দোকান। সাধারণত নিম্ন আয়ের মানুষরাই বেশি আসেন এসব দোকানে। কারণ বাজারে তৈরি পোশাকের দাম অনেক বেশি। উপজেলায় গোয়ালন্দ বাজার, দৌলতদিয়া বাজার, হামিদ মৃধার হাট, সামছু মণ্ডলের বাজার, কাটাখালি বাজার সহ দর্জি দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন, নিম্ন আয়ের মানুষ। বাজারের তৈরি পোশাকের চেয়ে তুলনামূলক কম খরচে নতুন জামা বানাতে তারা ছুটে আসছেন এসব দোকানে।
তবে একাধিক দর্জিরা জানান, বছরের দুইটি ঈদ এলেই কেবল তাদের দোকানে ভিড় বাড়ে। বছরের অন্য সময় কাজের অভাব থাকে। অনেকে সংসার চালাতে অন্য পেশায় যুক্ত হতে বাধ্য হন। অনেকে গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন রাজধানীতে। বাজারে দর্জির কাজের নিশ্চয়তা নেই। সারা বছর তেমন কাজ থাকে না। যত টুকু থাকে এতে সংসার চালানো সম্ভব হয় না। সুতরাং বাধ্য হয়ে কর্মের নিশ্চয়তার কারণে প্রতিনিয়ত মানুষ ছুঁটছে রাজধানীতে।
গোয়ালন্দ উপজেলা হামিদ মৃধার হাটের দর্জি মোহাম্মাদ শেখ বলেন, ঈদের সময় ভালো আয় হয়, কিন্তু বাকি সময় তেমন কাজ থাকে না। অনেকেই কৃষিকাজ করে দিন পার করে। তবে দুই ঈদে ভালো কাজ থাকে।
দৌলতদিয়া বাজারের দর্জি হাসান মোল্লা বলেন, আগে সারা বছর কাজ থাকত। এখন তৈরি পোশাকের কারণে অনেকে দোকানে আসে না। শুধু ঈদের সময় একটু ব্যস্ততা দেখা যায়।
এসময় একাধিক ক্রেতা বলেন, আমরা কৃষি কাজ করি। আমাদের মাসিক আয়-রোজগার নেই। ফসল বিক্রি করে পরিবারের নতুন পোষাক কিনতে হয়। এজন্য আমাদের খুব কষ্ট করে, নতুন পোষাক কিনে দিতে।
দর্জি দোকানে অল্প টাকায় বিভিন্ন পোষাক বানানো যায়। তারা বলেন, দর্জির দোকানের পোষাক টেকসই হয়।
স্থানীয় আরেক ব্যক্তি বলেন, দর্জির দোকানের পোশাকের মান আলাদা। কারণ এই পোষাক অনেক দিন ব্যবহার করা যায়। অল্প টাকায় বানানো যায়।
গোয়ালন্দ উপজেলার বাসিন্দা সাদেক মোল্লা বলেন, বর্তমান সংসার চালিয়ে নতুন পোষাক ক্রয় করা আমাদের জন্য অসম্ভব। তাই যেখানে কম দাম, সেখানে ছুটে যেতে হয়। দামও কম পড়ে, ফিটিংসও ভালো হয়। আবার টেকে বেশি দিন।
একাধিক দর্জিরা বলেন, যদি তারা সারা বছর কাজের নিশ্চয়তা পেতেন, তাহলে তাদের জীবিকা আরও স্থিতিশীল হতো। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
আরএস