আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ
মার্চ ২১, ২০২৫, ০৭:৩১ পিএম
আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ
মার্চ ২১, ২০২৫, ০৭:৩১ পিএম
ময়মনসিংহে থানায় অপচিকিৎসার অভিযোগ করায় এক সাংবাদিককে প্রেসক্লাবের ভিতরে ফেলে পিটিয়ে আহত করেছেন চিকিৎসক ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এতে ওই সাংবাদিকের মাথায় আঘাত লাগে এবং ডান কানে ৪০ শতাংশ কম শুনছেন বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
শুক্রবার পর্যন্ত ওই সাংবাদিক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগে ভর্তি আছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন সাংবাদিক।
আহত সাংবাদিক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের চর ঈশ্বরদিয়া খালপাড় এলাকার মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় দৈনিক ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, দৈনিক রুপালী বাংলাদেশ পত্রিকার ময়মনসিংহের নিজস্ব প্রতিবেদক।
ওই সাংবাদিকের ভাষ্য, তার বাবা মোসলেম উদ্দিন (৭০) ৭ থেকে ৮ দিন ধরে দাঁত ব্যথায় ভুগছিলেন। অনেক চেষ্টার পরও তাকে হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয়নি। পরে গত ১২ মার্চ বিকালে নগরীর শম্ভুগঞ্জ পশ্চিম বাজার এলাকার `এ্যাডভান্সড ডেন্টাল সলোশন` নামক একটি দন্ত চিকিৎসালয়ে নেয়া হয়। সেখানে সিমু আক্তার নামে এক ভুয়া চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া দাঁত না ফেলে ভালো দাঁত ফেলে দেয় এবং কিছু ওষুধ লিখে দেয়। এর ফলে মোসলেম বাড়িতে ফিরে দাঁতের ব্যথা আরও বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে, ১৩ মার্চ রাতে তার দাঁত তোলার চেষ্টা করা হয়, তবে দাঁতের ব্যথা কমেনি।
এ ঘটনায় গত ১৮ মার্চ মঞ্জুরুল ইসলাম কোতোয়ালী মডেল থানায় ভুয়া চিকিৎসক সিমু আক্তার ও ডা. আমিনুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরদিন, শম্ভুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলামকে রাতে চা পানের দাওয়াত দেন। পরে, সন্ধ্যা ৮টার দিকে এসআই আন্নান সংবাদকর্মীকে ফোন করে অভিযোগের তদন্ত করতে শম্ভুগঞ্জে আসেন।
এদিকে, সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম একা একা প্রেসক্লাবে চলে যান এবং সেখানেই চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সংবাদকর্মীকে থানায় অভিযোগ করার জন্য গালাগালি শুরু করেন এবং মারধর করেন। প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ঘটনাটি দেখার পর হামলা থামানোর চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায় এবং পুলিশ সাংবাদিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে রীচ হেলথ সেন্টারের চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম ও এ্যাডভান্সড ডেন্টাল সলোশনের সিমু আক্তারের নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলেও কেউ রিসিভ করেননি।
শম্ভুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আনোয়ার হোসেন জানান, চিকিৎসক আনোয়ার আমার ক্লাবের সদস্য। তিনি নিজেই সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলামকে চা পানের দাওয়াত দিয়েছিলেন, তবে পরে তার লোকজন নিয়ে সাংবাদিককে মারধর করা হয়। বর্তমানে সাংবাদিক চিকিৎসাধীন আছেন।
কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান বলেন, "মারধরের পর সাংবাদিক নিজেই বিষয়টি জানিয়ে ফোন করেছেন। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। আজ অথবা কাল তিনি অভিযোগ করবেন, এরপর অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।"
ইএইচ