মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
মার্চ ২২, ২০২৫, ০৩:২৭ পিএম
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
মার্চ ২২, ২০২৫, ০৩:২৭ পিএম
যৌন ও আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে দ্বিতীয়বারের মতো সাময়িক বরখাস্ত করেছে পরিচালনা পরিষদ।
শনিবার সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাদিয়া সুলতানা।
এর আগে, ৮ মার্চ কলেজ পরিচালনা পরিষদের এক সভায় ৮ নম্বর রেজুলেশন অনুসারে তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং ১০ মার্চ তাকে সাময়িক বরখাস্তের চিঠি দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে কলেজ চত্বরে খেলতে আসা দুই স্কুলছাত্রীকে ডেকে নিয়ে যৌন হেনস্তার অভিযোগে ওই অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। তখন তিনি বিভিন্ন স্থানে তদবির করে রেহাই পান।
জানা যায়, অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদের কথায় কথায় ছাত্রীদের গায়ে হাত দেওয়ার অভ্যাস ছিল, যা শিক্ষার্থীরা লজ্জায় প্রতিবাদ করতে পারেনি। তাছাড়া, তিনি কাগজপত্রে জালিয়াতি করে অনৈতিকভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করছিলেন। গত ৫ আগস্ট, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কলেজের শিক্ষার্থীরা তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে। তারা যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে পরিচালনা পরিষদ অধ্যক্ষকে সতর্ক করে এবং অভিযোগের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তাকে কলেজে আসা থেকে বিরত থাকতে বলে। এরপর পরিচালনা পরিষদ কলেজের শিক্ষক সাদিয়া সুলতানাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করে। তবে অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ এসব উপেক্ষা করে মাঝে মাঝে কলেজে গিয়ে কাগজপত্র ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা অব্যাহত রাখেন। এরই মধ্যে পরিচালনা পরিষদ কলেজের আর্থিক বিষয়ে অনিয়মের প্রমাণ পায়।
পরবর্তীতে পরিচালনা পরিষদ একাধিকবার সভা করে অধ্যক্ষকে তিনবার কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায়। কিন্তু তিনি কোনো জবাব দেননি। সর্বশেষ ৮ মার্চ পরিচালনা পরিষদের এক সভায় যৌন ও আর্থিক কেলেঙ্কারি এবং পরিচালনা পরিষদের সাথে অসদাচরণের কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং ১০ মার্চ তাকে বরখাস্তের চিঠি দেওয়া হয়।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাদিয়া সুলতানা বলেন, “পরিচালনা পরিষদ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে এবং তদন্তেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। বারবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি। এজন্য পরিচালনা পরিষদ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।”
সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ বলেন, “বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পেলাম। অ্যাডহক কমিটির পাঁচ সদস্যের মধ্যে তিনজনই অবৈধ। সেই কমিটির এখতিয়ার নেই আমাকে বরখাস্ত করার।”
এ বিষয়ে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী বলেন, “কলেজের পূর্ববর্তী পরিচালনা পরিষদ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করে। সেই তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।”
ইএইচ