রাজবাড়ী প্রতিনিধি
মার্চ ২২, ২০২৫, ০৭:০৩ পিএম
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
মার্চ ২২, ২০২৫, ০৭:০৩ পিএম
পৃথিবীর আলো-বাতাসে বেঁচে থাকতে চায় সেরিব্রাল পালসি রোগে আক্রান্ত শিশু মো. আরাফাত হোসেন (৬)। সেরিব্রাল পালসি রোগে আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্রেইনে অস্ত্রোপচার করলে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে আরাফাত। পূর্ণ হবে তার লেখাপড়া করে মা-বাবার স্বপ্নপূরণের, ফিরে পাবে সে তার বাবা-মায়ের কোল।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের ইন্দুরদি এলাকার মো. আব্দুল মুন্নাফ শেখ ও মোছা. সাথী বেগম দম্পতির ছেলে আরাফাত হোসেন (৬)। ছেলেকে লেখাপড়া করিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে স্বপ্ন দেখছিলেন আরাফাতের বাবা-মা। ২০১৯ সালের জুলাই ২বার হঠাৎ করেই আরাফাতের সমস্যা দেখা দেয়। আশপাশের চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করান। তারপর শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মো. মিজানুর রহমান পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ফরিদপুর শিশু হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে প্রথমবার ১৫ দিন চিকিৎসা করিয়ে বাড়ীতে চলে আসেন।
দ্বিতীয়বার পুনরায় ১ বছর পর ১৫ দিন চিকিৎসার জন্য গিয়ে দুরারোগ্য রোগের কথা জানতে পারেন। ফরিদপুর শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকগণ শিশু আরাফাতকে ঢাকার সিআরপি`তে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। এখানকার চিকিৎসকের পরামর্শে সেখানে গিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেরিব্রাল পালসি হয়েছে বলে জানা যায়। সাভার সিআরপিতে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করানো হয়।
সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আরাফাতের বাবা কাঠমিস্ত্রির কাজ করেই চলে সংসার। এ স্বল্প আয়ের সংসারে স্ত্রী ও ২টি সন্তান নিয়ে চলছিল তার সাংসারিক জীবনযাপন। এরই মধ্যে বড় ছেলেটির দেখা দেয় দুরারোগ্য সেরিব্রাল পালসি নামের জটিল রোগ। দীর্ঘদিন যাবৎ নিজের স্বল্প আয় এবং ধারদেনা সংসারের জিনিসপত্র বিক্রি, কিস্তির টাকা তুলে ছেলের চিকিৎসা করিয়ে এখন হাপিয়ে পড়েছেন দরিদ্র কাঠমিস্ত্রি। এখন তার সহায় সম্বল বলতে রয়েছে বাবার বাড়ীতে ২ শতাংশ জমি ও দিন শেষে মাথা গোজার জন্য একটি টিনের ঘর। তারা তাদের ছেলে মো. আরাফাত হোসেনের চিকিৎসা করাতে দরকার অনেক টাকা। সে জন্যই দেশ এবং দেশের বাইরের দানশীল মানুষের সহানুভূতি আশা করছেন।
চিকিৎসকদের মতে এ রোগের চিকিৎসা একমাত্র অস্ত্রোপচার করেই ভালো করা সম্ভব। তবে আমাদের দেশে এই রোগের তেমন চিকিৎসা নেই। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেন্নাইতে করা সম্ভব। তবে এজন্য অনেক ব্যয় বহন করতে হবে।চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা। শিশু আরাফাতের পরিবার সমাজের বিত্তশালীদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
প্রতিবেশী মো. জামান, মোছা. শাহিনা বেগম ও মোছা. খাদিজা আক্তার বলেন, মুন্নাফ-সাথী দম্পতির প্রথম সন্তান আরাফাত। ওর জন্মের পর খুবই আনন্দঘন পরিবেশের মধ্যদিয়ে চলছিল তাদের সংসার জীবন। আরাফাতে বয়স যখন দেড় বছর তখন তার অস্বাভাবিক অবস্থা দেখা দেয়। চিকিৎসা করাতে গিয়ে ধরা পড়ে রোগটি। এখন তারা আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত। চিকিৎসার পিছনে সহায় সম্বল সবই বিক্রি করেছেন, দিয়েছেন।রয়েছে সমাজের বিত্তবান মানুষ এগিয়ে এলে ছোট আরাফাত হয়ত পৃথিবীর আলো বাতাসে বেঁচে থাকতে পারবে।
স্থানীয় সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোছা. মর্জিনা খাতুন বলেন, দীর্ঘ ৪-৫ বছর ধরে দরিদ্র মুন্নাফ তার ছেলে আরাফাতের চিকিৎসা করিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এখন চিকিৎসক চিকিৎসা খরচ বাবদ যে অর্থের কথা বলেছেন তা জোগাড় করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। সমাজের দানবীর মানুষ এগিয়ে এলে হয়ত আরাফাতের সুচিকিৎসা করাতে পারবেন তার পরিবার।
সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দিতে যোগাযোগের ঠিকানা: মো. আরাফাত হোসেন (আরাফাতের মা বিকাশ পার্সোনাল : ০১৯১৯-৬০১৩১৮)।
আরএস