Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫,

ইন্দুরকানীতে ২ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

মার্চ ২৩, ২০২৫, ০৩:৩০ পিএম


ইন্দুরকানীতে ২ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যার হাসপাতাল থাকলেও মাত্র ২ জন চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ১২টি চিকিৎসক পদের মধ্যে ৯টি শূন্য থাকায় রোগীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সম্প্রতি বিশুদ্ধ পানির সংকটের কারণে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা নিতে হিমশিম খাচ্ছেন রোগীরা। চিকিৎসকের অভাবে বাধ্য হয়ে এ উপজেলার রোগীরা বরিশাল, খুলনাসহ দূরদূরান্তে গিয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে ৩১ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ২০০৬ সালে শেষ হয়। ২০০৮ সালের নভেম্বরে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ভবনটি স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে। ২০১৭ সালের অক্টোবরে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও প্রয়োজনীয় জনবল এখনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ১২টি পদের মধ্যে ডেন্টাল সার্জন ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সহ ৯টি পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া মেডিসিন, শল্য, গাইনি ও অবেদনবিদ চারটি জুনিয়র কনসালট্যান্টের পদসহ মোট ৬টি পদ ফাঁকা। চিকিৎসা কর্মকর্তার তিনটি পদের মধ্যে একটি পদ শূন্য রয়েছে। বর্তমানে মাত্র ২ জন চিকিৎসা কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রেষণে নিয়োগপ্রাপ্ত ৩ জন চিকিৎসকের মাধ্যমে হাসপাতালটি পরিচালিত হচ্ছে।

এছাড়া, আয়া ও বাবুর্চির দুটি করে পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র একজন করে। ওয়ার্ড বয়ের দুটি পদের একজনকে প্রেষণে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে পদায়ন করা হয়েছে।

ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ননী গোপাল জানান, দীর্ঘ ১৪ বছর পর হাসপাতালে আন্তবিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম চালু হয়েছে। তবে গাইনি ও অবেদনবিদ কনসালট্যান্ট না থাকায় এবং অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম না থাকায় প্রসূতি মায়েদের অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন চিকিৎসক পোস্টিং পেলেও ৮ জন যোগদান করেন। কিন্তু দুই বছরের মধ্যে বদলিজনিত কারণে ৬ জন অন্যত্র চলে গেছেন। বর্তমানে শুধুমাত্র নার্স ছাড়া প্রায় সব বিভাগেই স্টাফ সংকট রয়েছে। ফলে জরুরি বিভাগ, আন্তঃবিভাগ ও বহির্বিভাগের রোগীদের মানসম্মত সেবা দিতে চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, চিকিৎসকরা সপ্তাহে ৭২ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করছেন, যা তাদের শারীরিকভাবে ক্লান্ত করে তুলছে। এছাড়া ১ জন ওয়ার্ড বয় ও ১ জন নৈশপ্রহরী পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে থাকায় জনবল সংকট আরও প্রকট হয়েছে। শূন্য পদে কনসালট্যান্ট, মেডিকেল অফিসার ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং ডেপুটেশনে থাকা কর্মীদের ফিরিয়ে আনলে স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে তিনি মনে করেন।

এ বিষয়ে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. মতিউর রহমান জানান, ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকসহ অন্যান্য শূন্য পদগুলোতে নিয়োগের জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।

ইএইচ

Link copied!