কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
মার্চ ২৪, ২০২৫, ০২:১২ পিএম
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
মার্চ ২৪, ২০২৫, ০২:১২ পিএম
কিশোরগঞ্জের হাওরের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ঝুঁকিপূর্ণ টেকসই বেড়িবাঁধের। এক সময়ের এই অরক্ষিত হাওরে উজানের পানি ও অসময়ে বন্যায় ফসল তলিয়ে যেত। ফলে কৃষকের কষ্টের সীমা ছিল না। তাই এ বছর হাওর এলাকাগুলোতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে খুশি কৃষকরা।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জের ৯টি উপজেলায় প্রায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ১২৯টি ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাওরের বেড়িবাঁধগুলো গত বছরের ন্যায় এ বছর অনেক মজবুত এবং টিকসই হয়েছে তবে মিঠামইন উপজেলায় দু-একটি ছাড়া সবগুলো বেড়িবাঁধ কোন রকম দায়সারাভাবে কাজ করে সমাপ্ত করেছে। এরমধ্যে কিছু আছে পুরানো বাঁধের মাটি দিয়ে নির্মাণ করেছে নতুন বাঁধ। তুলনামূলকভাবে উচ্চতাও অনেক কম। কোনটিতে ঘাস নেই আবার অনেক জায়গায় ঘাস থাকলেও পরিচর্যার অভাবে মারা গেছে। নিয়ম অনুযায়ী বাঁধের ১০-১৫ ফুট দূরত্ব থেকে মাটি কাটার কথা থাকলেও পুরানো বাঁধের মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, হাওড়ের ফসল রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নির্মিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ৯টি উপজেলায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ১২৯টি ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে করে অকাল বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে বিস্তীর্ণ এলাকার বোরো ধান।
সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জে ৯টি উপজেলায় হাওরে প্রায় প্রতি বছর উজান থেকে আসা পানিতে তলিয়ে যায়। এতে করে একমাত্র বোরো ফসল হারিয়ে কপাল পোড়ে এলাকার হাজারো কৃষকের। এলাকার কৃষকরা সারাবছর অর্থকষ্টে ভোগেন। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিন দাবি ছিল বড় হাওড়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ। এতে করে হাওড়ের একমাত্র বোরো ফসল ডুবির আর শঙ্কা থাকবে না। তাই অতীত বছরের কথা বিবেচনা করে এ বছর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে হাওরে কৃষকরা সাধুবাদ জানিয়েছেন।
করিমগঞ্জ উপজেলার চংনোয়াগাঁও কৃষক মো: মুজাহিদ মিয়া ও সাইফুল ইসলাম বাদল বলেন, ‘সব জায়গার বেড়িবাঁধই মোটামুটি ভাল কিন্তু চং নোয়াগাঁও মৌজার বেরিবাঁধ সবচেয়ে ভাল হয়েছে। এরশাদ ভাই নিচে দাঁড়াই থাইকা সবসময় কাজ করাইছে। আমরা এ বছর অনেক জায়গার রেড়িবাঁধ দেখছি। গত বছর অনেক হেয়তা আছিল। গত বছরের তুলনায় এবছর রাস্তা অনেক উঁচু হয়েছে। আমরা অনেক খুশি।’
নিকলী উপজেলার শিংপুর ইউনিয়নের কৃষক মো: আল-আমিন মিয়া ও মো: মল্লিক মিয়া বলেন, ‘গত বারের তুলনায় এবারের বেরিবাধ উন্নত, মজবুত অনেক শক্ত করে করছে এবং উুঁচু হয়েছে। দুই বছর আগে যে বেরিবাধগুলো করছে তার চেয়ে এবার ভাল হয়েছে। কোন কমপ্লিন নেই।’ এ ধরণের রেরিবাধ পেয়ে আমরা খুশি।’
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রতিবছরই বাঁধ নির্মাণে কৃষকদের কিছু অভিযোগ থাকে। তাই এবছর বাঁধ নির্মাণ কাজ সার্বক্ষণিক তদারকি করা হয়েছে। কাজে ত্রুটি বিচ্যুতি থাকতেই পারে। যেখানে ত্রুটির অভিযোগ পাবো সেখানে সাথে সাথে সমাধান করা হবে। আশা করি এ বছর কৃষকরা নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলতে পারবে।
বিআরইউ