Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৮ মার্চ, ২০২৫,

হাওরে উন্নয়ন প্রকল্পে সফল এলজিইডি, চলছে কর্মযজ্ঞ

ইমরান হোসেন, কিশোরগঞ্জ

ইমরান হোসেন, কিশোরগঞ্জ

মার্চ ২৫, ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম


হাওরে উন্নয়ন প্রকল্পে সফল এলজিইডি, চলছে কর্মযজ্ঞ

কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলে মানুষের যাতায়াত ও জীবনমান উন্নয়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর আওতায় কয়েকশ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পে বর্তমানে কর্মযজ্ঞ চলছে।

এর আগে হাওর এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও তা ছিল অপরিকল্পিত। অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে এসব উন্নয়নের প্রকৃত সুফল পাচ্ছিল না হাওরবাসী। কৃষিপণ্য পরিবহন ও চলাচলের দুর্ভোগের পাশাপাশি পর্যটকদের আবাসন সমস্যার কারণে স্থানীয় অর্থনীতির অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছিল। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট খাতগুলোকে চাঙ্গা করতে হাওরে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে- ১. মিঠামইন-কামালপুর ফেরি ঘাটে ঘোড়াউত্রা নদীর উপর সেতু: ১৪৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০০২ মিটার দীর্ঘ এ সেতুর নির্মাণকাজ ১৬ নভেম্বর ২০২২ সালে শুরু হয়, যা ১৬ নভেম্বর ২০২৫ সালে সম্পন্ন হবে।

২. মিঠামইন-কাজীপাড়া-মহিষার কান্দি সেতু: ৩৬২ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটি ৪৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬ জানুয়ারি ২০২১ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ২০২৫ সালের জুন মাসে সম্পন্ন হবে।

৩. মিঠামইন রেস্ট হাউজ নির্মাণ প্রকল্প: ২৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ জানুয়ারি ২০২২ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়, যা ২০২৫ সালের জুনে শেষ হবে।

৪. মিঠামইন বাজার ২তলা মার্কেট নির্মাণ প্রকল্প: ২ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ শুরু হয়, যা ২০২৫ সালের এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে।

৫. ইটনা-বর্শিকুড়া সেতু: ৫৯০.৫৪ মিটার দীর্ঘ এ সেতু ৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে, যা এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

এছাড়াও বেশ কয়েকটি সেতু, সড়ক ও পর্যটকদের আবাসনের জন্য সার্কিট হাউজ নির্মাণের কাজ চলছে।

মিঠামইন উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. নূর হোসেন ও আবু হোসেন বলেন, "এই ব্রিজটি আমাদের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। আগে নৌকায় পার হতে হতো, এখন ধান, গরু-ছাগল সহজেই বহন করা যাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (টিটিসি) যেতে কিশোরগঞ্জে যেতে হতো, এখন আর সেটি প্রয়োজন নেই।"

ইটনা উপজেলার বড়শিকুড়া গ্রামের আব্দুল গনি বলেন, "আগে গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসার জন্য যাতায়াতে অনেক সমস্যা হতো। এই সেতুর ফলে এখন গর্ভবতী মায়েদের জন্য যাতায়াত সহজ হবে এবং বর্ষাকালে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। হাওর এলাকায় এটি পর্যটনের নতুন কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে।"

ইটনা উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ননী গোপাল দাস বলেন, "বর্শিকুড়া গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছিল। এই সেতু চালু হলে তাদের বহু বছরের কষ্টের অবসান ঘটবে।"

কিশোরগঞ্জ এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম বলেন, "আমরা হাওর এলাকায় বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। কিছু প্রকল্পের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সময়মতো এগুলো শেষ হলে হাওরবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। কৃষিক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসবে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এই প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।"

ইএইচ

Link copied!