দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
মার্চ ২৫, ২০২৫, ০৭:৪৭ পিএম
দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
মার্চ ২৫, ২০২৫, ০৭:৪৭ পিএম
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে মেয়ের বিয়েকে কেন্দ্র করে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বাসায় ডেকে এনে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের নাম হারুন অর রশিদ, যিনি একই সাথে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনাটি ঘটে চিলাহাটি ইউনিয়নের তিস্তাপাড়া এলাকায়।
এ ঘটনায় দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন— আব্দুস সাত্তার, তার স্ত্রী ফরিদা বেগম, ছেলে খোকন বাবু ও তার চার মাসের অন্তসত্ত্বা স্ত্রী রেহেনা খাতুন।
মঙ্গলবার আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে হারুন অর রশিদকে প্রধান আসামী করে ৮ জনের নামে দেবীগঞ্জ থানায় এজাহার দায়ের করেন।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আব্দুস সাত্তারের বড় ছেলে মোস্তাকিম ইসলাম ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের মেয়ে সিফাতে সাদিয়া সুহা`র সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে দুই পরিবারের অগোচরে ২০২১ সালে মোস্তাকিম ও সুহা বিয়ে করেন। বিষয়টি সম্প্রতি জানাজানি হয় এবং মেয়ের পরিবার এটি মেনে না নেওয়ায় প্রায় ২০ দিন আগে মোস্তাকিম ও সুহা বাড়ি ছেড়ে চলে যান। পরে মেয়ের বাবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় মেয়েকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসেন। এরপর গতকাল সোমবার (২৪ মার্চ) সুহা ও মোস্তাকিম আবারো বাড়ি থেকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি চলে যান।
বিষয়টি সুহার পরিবার জানতে পেরে গতকাল রাত ৯টায় চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার লোকজন মোস্তাকিমের বাসায় গিয়ে তার বাবা-মায়ের কাছে মোস্তাকিমের অবস্থান জানতে চায়। কিন্তু তারা মোস্তাকিমের অবস্থান জানেন না বলে জানালে বাসায় থাকা বাবা-মা ও তার ভাবিকে জোর করে ডেকে আনা হয় চেয়ারম্যানের ভাই নূর হোসেনের বাসায়। এরপর মেয়ের সন্ধান চেয়ে তাদেরকে বেধড়ক মারধর শুরু করে চেয়ারম্যানের লোকজন। এতে মোস্তাকিমের মায়ের দুই হাত ভেঙ্গে যায় এবং একই সময়ে তার যৌনাঙ্গে একাধিকবার লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। মোস্তাকিমের ছোট ভাইয়ের চার মাসের অন্তসত্ত্বা স্ত্রীকে এ সময় পেটে আঘাত করা হয়। একই সাথে ছোট ভাই খোকনকে ভাউলাগঞ্জ বাজারে তার কর্মস্থল থেকে কৌশলে ঘটনাস্থলে ডেকে এনে বস্তাবন্দী করে তার পিঠ ও কোমড়ে বেধড়ক মারধর করা হয়।
পরে বিষয়টি জানতে পেরে খোকনের শ্বশুর ৯৯৯ এ কল করেন এবং দেবীগঞ্জ থানাকে অবগত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগীদের উদ্ধার করে। এরপর গুরুতর আহত অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন চারজন। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চিলাহাটি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, “গতকাল ইফতার মাহফিল ও উঠান বৈঠকের জন্য অন্য এলাকায় ছিলাম। পরে এই ঘটনা শুনি। মারধরের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।”
দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগে কিছুটা ত্রুটি রয়েছে। সংশোধন করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
ইএইচ