Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৫,

শরীয়তপুর-চাঁদপুর ফেরিঘাটে যাত্রীবাহী গাড়ি থেকে চাঁদাবাজি

আশিকুর রহমান হৃদয়, শরীয়তপুর

আশিকুর রহমান হৃদয়, শরীয়তপুর

মার্চ ২৯, ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম


শরীয়তপুর-চাঁদপুর ফেরিঘাটে যাত্রীবাহী গাড়ি থেকে চাঁদাবাজি

শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কের নরসিংহপুর ফেরিঘাট এলাকায় যাত্রীবাহী গাড়ি থেকে রাতদিন সমানতালে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন সড়কের বিভিন্ন স্থানে একদল চাঁদাবাজ সিএনজি, অটোরিকশা, বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক থামিয়ে জোরপূর্বক টাকা আদায় করছে। এতে যাত্রী ও চালকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে গাড়ি ও যাত্রীর চাপ থাকায় চাঁদাবাজ চক্রটি আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

শনিবার সকালে শরীয়তপুর-চাঁদপুর নরসিংহপুর ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটের দুই প্রবেশপথে চৌকি বসিয়ে চার থেকে পাঁচ জনের একটি চক্র প্রতিটি যানবাহন থেকে ৫০ থেকে ২,০০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার নরসিংহপুর ফেরিঘাট এলাকায় সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে একদল চাঁদাবাজ দল বেঁধে সিএনজি, অটোরিকশা, বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক থামিয়ে চাঁদা আদায় করছে। তারা প্রতিটি যানবাহন থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দাবি করে। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চালক ও সহকারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও মারধর করা হয় এবং গাড়ি চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা হয়। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

এক ফরিদপুরগামী যাত্রী বলেন, "সড়কে এই চাঁদাবাজি নতুন কিছু নয়, এটি দীর্ঘদিন ধরে চলছে। প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালালেও কিছুদিন পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়। ঈদের সময় চাঁদাবাজির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যায়। আমরা চাই, এটি বন্ধ হোক।"

এক ট্রাকচালক মামুনুর রশীদ জানান, "আমি কাচামাল নিয়ে নিয়মিত এপথে চলাচল করি। নরসিংহপুর ফেরিঘাট ও চাঁদপুর ফেরিঘাটে আমাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করা হয়। রাতে চাঁদার পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যায়। আমরা প্রতিবাদ করতে সাহস পাই না, কারণ আমরা এই পথেই চলাচল করি। কিছু বললে ইজারাদারের লোকজন পরিচয়ে আমাদের মারধর করা হয়। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।"

এক বাসচালক রাকিব বলেন, "আমি চট্টগ্রাম থেকে ফরিদপুর রোডে বাস নিয়ে চলাচল করি। আগেও বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা দিতে হতো, এখনো দিতে হয়। সবচেয়ে বেশি চাঁদা দিতে হয় নরসিংহপুর ফেরিঘাটে, যেখানে আমাদের কাছ থেকে ১,০০০ থেকে ২,০০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবি করা হয়। না দিলে বাস আটকে রাখা হয় এবং দুর্ব্যবহার করা হয়। আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাই।"

চাঁদা উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত চাঁদাবাজরা কোনো কথা না বলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তানভীর হোসেন (অতিরিক্ত দায়িত্ব, ভেদরগঞ্জ সার্কেল) বলেন, "চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব। কেউ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"

ইএইচ

Link copied!