মহুয়া জান্নাত মনি, রাঙ্গামাটি
এপ্রিল ১২, ২০২৫, ০২:১৭ পিএম
মহুয়া জান্নাত মনি, রাঙ্গামাটি
এপ্রিল ১২, ২০২৫, ০২:১৭ পিএম
পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর তিন দিনব্যাপী বৈসাবী উৎসব শুরু হয়েছে। রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে চাকমাদের বিজু, মারমাদের সাংগ্রাই ও ত্রিপুরাদের বৈসুক উৎসব শুরু হয়। সকালে পাহাড়ি নারীরা বাগান থেকে ফুল ও নিমপাতা সংগ্রহ নিয়ে একে একে চলে আসে কাপ্তাই হ্রদে। সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ প্রার্থনা করে কাপ্তাই হ্রদে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে পানিতে ফুল ভাসিয়ে উৎসবের সূচনা করেন।
শনিবার সকালে রাঙ্গামাটির গর্জনতলীতে ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্য ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে ত্রিপুরাদের বৈসুক উৎসবের উদ্বোধন করেন, প্রধান অতিথি রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কৃষিবিদ মাচাং কাজল তালুকদার।
এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, বিশেষ অতিথি জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রেজাউল করিম, ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি বিদ্যুৎ শংকর ত্রিপুরাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে রাঙ্গামাটি রাজবাড়ী ঘাটে বৈসাবী উদযাপন কমিটি উদ্যোগে ভোরে গ্রামের তরুণ-তরুণীরা ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে তিন দিন উৎসবের সূচনা করা হয়। রাজবাড়ী ঘাটে বৈসাবি উৎদযাপন কমিটির উদ্যোগে ফুল বিজুর উদ্বোধন করেন, স্থানীয় সাবেক সংদস্য শ্রী ঊষাতন তালুকদার।
বৈসাবী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৃত রঞ্জন চাকমা, সদস্য সচিব ইন্টু মনি চাকমাসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জনগোষ্ঠীগুলোর তিন দিনব্যাপী প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু। রবিবার মূল বিজু পালিত হয়। সোমবার গোজ্যেপোজ্যে দিন পালিত হবে যার যার ঘরে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৩টি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলা নববর্ষকে বিদায় জানানোর এ অনুষ্ঠান তাদের প্রধান সামাজিক উৎসব হিসেবে বিবেচিত। এই উৎসব চাকমা জনগোষ্ঠী বিজু নামে, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী মানুষ সাংগ্রাই, মারমা জনগোষ্ঠী মানুষ বৈসুক, তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী বিষু, কোনো কোনো জনগোষ্ঠী বিহু নামে পালন করে থাকে।
১৩ এপ্রিল আর চৈত্র সংক্রান্তির দিনকে বলা হয় মুল বিজু। এদিন ঘরে ঘরে রান্না হয় ঐতিহ্যবাহী খাবার পাঁজন। তা দিয়ে দিন ভর চলে শুধু অতিথি আপ্যায়ন। আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে সপ্তাহব্যাপী সাংগ্রাই জলোৎসবের মধ্যদিয়ে পাহাড়ে বৈসাবী উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
বৈসাবি উৎসবের আনন্দ উচ্ছ্বাস পাহাড়ের সকল সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি আর সৌহার্দ্য বাড়বে এমন প্রত্যাশা সকলের।
বিআরইউ