Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫,

দুর্গম চরাঞ্চলে আবারও রাসেল ভাইপারের আতঙ্ক

জাহিদুল ইসলাম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)

জাহিদুল ইসলাম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)

এপ্রিল ১৪, ২০২৫, ০৪:৪৬ পিএম


দুর্গম চরাঞ্চলে আবারও রাসেল ভাইপারের আতঙ্ক

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে নতুন করে আবারও রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে জমির ফসল তোলা, পরিচর্যা করা এবং গবাদি পশুর খাবার সংগ্রহে বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চলের কয়েক হাজার কৃষক। ফলে পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলের মানুষজন চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত তিন সপ্তাহে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের চার মজলিশপুর, চর মহিদাপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় রাসেল ভাইপার সাপের ছোবলে তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন এখনো ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং একজন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

জানা যায়, গোয়ালন্দ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। কেউ নিজের জমি, কেউবা অন্যের জমি ইজারা নিয়ে চাষাবাদ করেন। চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জমিতে ভুট্টা, বাদাম, তিল, আমন ও আউশ ধানের চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু ফসলের মাঠে বিষধর রাসেল ভাইপার সাপের দেখা মেলায় কৃষকরা চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন।

চরাঞ্চলের বাসিন্দা আলমাস শেখ জানান, “আমার ছেলে সাগর শেখ দুই দিন আগে ভুট্টা ক্ষেতে কীটনাশক দিতে গেলে রাসেল ভাইপার সাপ ছোবল দেয়। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই, তবে এখনো সে পুরোপুরি সুস্থ হয়নি।”

চর মজলিশপুরের বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, “তিন সপ্তাহ আগে আমার ছেলে শুরুর শেখকে মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতে কাজ করার সময় রাসেল ভাইপার সাপ ছোবল দেয়। ফরিদপুর মেডিকেলে চিকিৎসা নেওয়ার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে, তবে পুরোপুরি সুস্থ নয়।”

একাধিক কৃষক জানান, “গত বছরও এই সাপের আতঙ্ক ছিল, মাঝখানে কিছুটা কমলেও বর্তমানে আবার তা বাড়ছে। মাঠে কামলা পাওয়া যাচ্ছে না। এখনই যদি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে কৃষকরা চরম ক্ষতির মুখে পড়বে।”

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান বলেন, “রাসেল ভাইপার সাপ নিয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ সরাসরি অভিযোগ করেনি। তবে দ্রুত চরাঞ্চলে গিয়ে সচেতনতামূলক উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হবে। সেখানে সতর্কতা ও করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে। পাশাপাশি স্থানীয় কৃষি ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম—যেমন গামবুট, হ্যান্ড গ্লাভস ইত্যাদি সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ইএইচ

Link copied!