Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫,

ঐতিহ্যবাহী নাসিরনগরের শুঁটকি মেলা, এখনও চলছে পণ্য বিনিময় প্রথা

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:

এপ্রিল ১৫, ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম


ঐতিহ্যবাহী নাসিরনগরের শুঁটকি মেলা, এখনও চলছে পণ্য বিনিময় প্রথা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুলিকুন্ডা (উত্তর) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি মেলা, যা চলবে আগামীকাল (বুধবার) পর্যন্ত। বাংলা নববর্ষের দ্বিতীয় দিনে প্রতিবছর আয়োজিত এই মেলা আজও ধরে রেখেছে প্রাচীন পণ্য বিনিময় প্রথা, যা প্রায় ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চালু রয়েছে।

মেলায় স্থানীয় জেলেরা তাদের সংগ্রহ করা নানা ধরনের দেশি ও সামুদ্রিক শুঁটকি বাজারে আনেন, আর কৃষকরা চাল, ডাল, ধান, আলু, শিমের বিচি, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা আম, সরিষাসহ নানা কৃষিপণ্য দিয়ে বিনিময়ের মাধ্যমে শুঁটকি সংগ্রহ করেন।

শুঁটকির তালিকায় রয়েছে— বোয়াল, গজার, শোল, বাইম, ছুরি, লইট্টা, পুঁটি, গনা, গুচি, ট্যাংরা, আইড়, কার্পজাতীয় মাছের ডিম এবং বিরল প্রজাতির ইলিশ শুঁটকি। শুধু শুঁটকিই নয়, মেলায় স্থান পেয়েছে স্থানীয় কুমারদের তৈরি মাটির হাঁড়ি-পাতিল, থালা-ঘটি, পুতুল ও খেলনাও।

সুনামগঞ্জ থেকে আগত এক ব্যবসায়ী দুলাল চন্দ্র দাস বলেন, ‘এই প্রথম এসেছি শুঁটকি নিয়ে। মানুষ চাল-ডাল দিয়ে শুঁটকি নিচ্ছে দেখে খুব ভালো লাগছে।’

স্থানীয় প্রবীণ হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর বয়স থেকে এই মেলায় আসছি। আলু, ডাল, সরিষা দিয়ে এবারও শুঁটকি নিয়েছি। এটা আমাদের গর্বের উৎসব।’

নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম. এ. হান্নান জানান, ‘একসময় এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের জেলেরা বসবাস করতেন। কাগজের টাকা না থাকায় তারা কৃষিপণ্যের বিনিময়ে শুঁটকি বিক্রি করতেন। সেই থেকেই এই মেলার সূচনা।’

মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জানান, প্রায় পাঁচ একর এলাকা জুড়ে এবারের আয়োজন। করোনার কারণে টানা দুই বছর মেলা বন্ধ ছিল, তাই এবার উৎসব ঘিরে মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে ব্যাপক উৎসাহ ও অংশগ্রহণ।


বিআরইউ
 

Link copied!