Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫,

মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে জাটকা নিধন

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদী প্রতিনিধি

এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম


মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে জাটকা নিধন

বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ, শুধু জনপ্রিয় খাদ্যই নয়—এটি আমাদের আবেগ, ঐতিহ্য ও অর্থনীতির প্রতীক। ইলিশের উৎপাদনের একটি বড় অংশ নির্ভর করে জাটকা সংরক্ষণের ওপর। অথচ সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নরসিংদীর মেঘনা নদীতে জাটকা নিধন অব্যাহত রয়েছে।

প্রতিদিন ভোরে জেলেরা জাল নিয়ে মেঘনায় নেমে পড়ছেন। কারেন্ট জালসহ বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে ধরা হচ্ছে জাটকা ইলিশ। এসব মাছ স্থানীয় হাটবাজার, পাড়া-মহল্লা এমনকি বাসাবাড়িতেও অবাধে বিক্রি হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, এমপি মার্কেট, নরসিংদী বড় বাজার, নতুন বাজার, বউ বাজার, হোসেন বাজার, করিমপুর বাজার, ভেলানগর ও বটতলা বাজারে বসেছে জাটকার হাট। প্রতি কেজি জাটকা ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে টাস্কফোর্স অভিযান চালানো হলেও মৎস্য বিভাগের তেমন কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অনেকটাই ‘ফ্রিস্টাইলে’ চলছে জাটকা নিধন ও বাণিজ্য। ফলে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, জাটকা রক্ষায় মৎস্য বিভাগের ভূমিকাটি কতটা কার্যকর?

সচেতন মহলের মতে, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে মেঘনায় ইলিশের সংকট ঘনীভূত হবে এবং জেলে পরিবারগুলো পড়বে চরম বিপাকে।

জেলেরা জানান, তারা দৈনিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল। নিষিদ্ধ সময়ে খাদ্য সহায়তা না পাওয়ায় জীবিকার তাগিদে তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় মাছ ধরতে বাধ্য হচ্ছেন।

নরসিংদী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফয়সাল আজম জানান, ৮ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ’ পালন করা হয়েছে। লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করা হলেও পর্যাপ্ত জনবল ও অর্থের অভাবে অভিযান জোরদার করা সম্ভব হয়নি। তিনি আরও বলেন, "ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।"

তবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার দাবি বিপরীত মন্তব্য দিয়েছেন সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তাসকিরা বেগম। তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, “জাটকা ধরার ব্যাপারে আমি কথা বলতে নারাজ। এটা মৎস্য বিভাগের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমার বিরুদ্ধে যা খুশি লিখেন, আমার কিছু যায় আসে না।”

এই বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, “সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে একজন নারী কর্মকর্তা কর্মরত আছেন, যিনি কার্যক্রম পরিচালনায় অক্ষম। আমরা চাইছি, তার স্থলে একজন পুরুষ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হোক।”

এমন পরিস্থিতিতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং জেলেদের জন্য যথাযথ সহায়তা নিশ্চিত না হলে দেশের জাতীয় মাছ ইলিশ ও মৎস্যসম্পদ ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইএইচ

Link copied!