Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫,

মৎস্য চাষে সফল উদ্যোক্তা আলিম, অনুপ্রাণিত হয়ে ঝুঁকছেন অন্যরাও

কে. এম. সালেহ, ঝিনাইদহ

কে. এম. সালেহ, ঝিনাইদহ

এপ্রিল ২০, ২০২৫, ০৩:৪৯ পিএম


মৎস্য চাষে সফল উদ্যোক্তা আলিম, অনুপ্রাণিত হয়ে ঝুঁকছেন অন্যরাও

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের পায়রাডাঙ্গা গ্রামের মৃত মুজিবর রহমানের ছেলে আব্দুল আলিম মৎস্য চাষে সফল এক উদ্যোক্তার নাম। ২০১৯ সালে গ্রামের একটি বিলে সাড়ে ৯ একর জমির তিনটি পুকুর লিজ নিয়ে শুরু করেন মাছ চাষ।

শুরুতে পাবদা, তেলাপিয়া ও দেশি ট্যাংরা মাছের মিশ্রচাষ করে কিছুটা লাভ পেলেও করোনা মহামারির সময় ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পড়েন। খাবার কেনার টাকাও জোগাড় করা ছিল কঠিন।

তবে হাল ছাড়েননি আলিম। হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় ‘আশা’ এনজিও’র ‘মৎস্য চাষ প্রকল্প’ খাত থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ান। এরপর ঝিনাইদহ মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার থেকে রুই, কাতলা, মৃগেল, পাবদা ও তেলাপিয়ার পোনা এনে সেগুলোর সঠিক পরিচর্যা ও সময়মতো খাবার প্রয়োগ করে পুনরায় মাছ চাষ শুরু করেন। মাছ বাজারজাত করে খরচ বাদে লাভ হয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।

পরে দ্বিতীয় দফায় আরও ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে নতুন পুকুর খনন করে পাঙ্গাস ও কার্পজাতীয় মাছ চাষ শুরু করেন। এ বছরেই প্রায় ৭ লাখ টাকা লাভ করেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে আব্দুল আলিমের পুকুরের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাতটিতে। ৩৫ একর আয়তনের এসব জলাশয়ে তিনি মিশ্রভাবে তেলাপিয়া, পাবদা, দেশি ট্যাংরা, রুই, কাতলা ও মৃগেল চাষ করছেন। ব্যবসায়ীরা সরাসরি পুকুর থেকেই মাছ কিনে নিয়ে যান।

প্রতিবছর মাছ চাষ করে আব্দুল আলিম আয় করছেন প্রায় ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা। পাশাপাশি পুকুর পাড়ে সবজি ও কলা চাষ করে মাসে বাড়তি আয় হচ্ছে। তার সাফল্য দেখে গ্রামের অনেকেই এখন মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

আব্দুল আলিম বলেন, “আশার ‘মৎস্য চাষ প্রকল্প’ খাতের ঋণে সার্ভিস চার্জ কম, আবার মাসিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য হওয়ায় সুবিধা হয়েছে। এছাড়া আশা এনজিও’র টেকনিক্যাল অফিসার কিলন চন্দ্র রায় নিয়মিত আমার প্রকল্প পরিদর্শন করেন, পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেন। ফলে ঋণের পুরো টাকা বিনিয়োগ করেও কিস্তি চালাতে কোনো কষ্ট হয় না।”

আশা এনজিও’র টেকনিক্যাল অফিসার (কৃষি) কিলন চন্দ্র রায় বলেন, “আব্দুল আলিমের সফলতার পেছনে সঠিক পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমরা আশা এনজিও’র নিজস্ব অর্থায়নে তাকে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার, সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহযোগিতা করেছি। তার এই সাফল্য অন্যান্য মাছ চাষিদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে।”

ইএইচ

Link copied!