মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
এপ্রিল ২০, ২০২৫, ০৭:১৩ পিএম
মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
এপ্রিল ২০, ২০২৫, ০৭:১৩ পিএম
নেত্রকোনার মদনে ১২ বছরের এক শিশু দুই মাসের অন্ত:সত্ত্বা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার দুই পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বৈঠকে বসলে জোরপূর্বক শিশুটিকে তুলে নিয়ে যায় অভিযুক্ত ৯ম শ্রেণির কিশোর মাহিন মিয়াসহ কয়েকজন। উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের জাওলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার গ্রামের বাড়িতে গেলে, মেয়ে শিশুটির দাদিকে পাওয়া যায়। অভিযুক্ত কিশোর মাহিন মিয়ার বাড়িতে গেলে চাচা সাদেক মিয়া ও বাবা আরজু মিয়াকে বাড়িতে পাওয়া যায়।
জানা গেছে, মেয়ে শিশুটির বাবা গত কয়েক বছর আগে বিদুৎপৃষ্টে মারা যায়। মা গার্মেন্টেসে চাকুরি করে। মেয়ে শিশুটিকে গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধা দাদির সাথে রেখে যায়। এ দিকে পাশের বাড়ির আরজু মিয়ার বখাটে ছেলে নবম শ্রেণির পড়ুয়া ছাত্রের সাথে শিশুটির প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। বৃদ্ধা দাদি থাকায় মাঝে মধ্যে মাহিন মেয়েটির সাথে রাতে দেখা করতে আসে। এক পর্যায়ে মেয়েটি গর্ভবর্তী হয়ে পড়ে। বিষয়টি মেয়ের খালা জানতে পেরে কে এ ঘটনা ঘটিয়েছে শিশু মেয়েটির কাছে জানতে চাইলে মাহিনের কথা বলে। পরে এ নিয়ে মাহিনের বাবার সাথে কথা হলে তারা মেয়েটিকে বিয়ে করাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। শুক্রবার রাতে এ নিয়ে প্রতিবেশী লোকজনের সাথে গ্রাম বৈঠকে বসে। এসময় মেয়েটিকে ঘরের ভিতর একা পেয়ে জোরপূর্বক মাহিনসহ কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। বিভিন্ন জায়াগায় খোঁজাখুঁজির পরও তাঁদের সন্ধান মিলছে না। বর্তমানে মেয়েটিকে না পেয়ে তার পরিবার হতাশা গ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
শিশু মেয়েটির দাদি জানায়, আমার নাতি দুই থেকে আড়াই মাসের অন্ত:সত্তা। বিষয়টি মাহিনের পরিবারকে জানালে তারা আমার নাতিকে বিয়ে করাবে বলে সিদ্ধান্ত দেয়। পরে গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে বসলে হঠাৎ মাহিনসহ কয়েকজন আমার ঘরে এসে আমার নাতিকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এখন বুঝতে পারলাম আমার নাতিকে মাহিন বিয়ে করবে না। তার পরিবারের পরামর্শ ক্রমে বাচ্চাটা নষ্ট করে আবার আমার নাতিকে ফেরত দেবে। আমরা খুবই গরীব মানুষ। আমার মেয়েটিও গার্মেন্টসে থাকে। থানায় কিভাবে অভিযোগ করবো বুঝতেও পারছি না।
এদিকে কিশোর মাহিনের বাবা আরজু মিয়া জানান, আমরা দুই পরিবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলাম বিয়ে করাব। কিন্তু দুইজনেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। আমরা খোঁজাখুজি করছি।
ইউপি মেম্বার আব্দুল্লাহ আল মামুন রুবেল বিষয়টি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ নিয়ে আমরা গ্রাম বৈঠকে বসে ছিলাম। পরে শুনেছি মেয়েটিকে মাহিন জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গেছে। বৈঠকে ছেলের পরিবার খুবই খারাপ আচরণ করেছে।
এ ব্যাপারে মদন থানার ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে রোববার ঘটনা স্থলে পুলিশ প্রেরণ করা হয়েছে। মেয়েটির পবিবারকে বলা হয়েছে থানায় অভিযোগ করার জন্য। নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধার করার জন্য চেষ্টা করা চলছে।
আরএস