আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ
এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ১০:৪৩ এএম
আব্দুল্লাহ আল আমীন, ময়মনসিংহ
এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ১০:৪৩ এএম
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মাসকান্দা গনসার মোড় গোরস্থান এলাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন ষাটোর্ধ্ব মোছা. হুরতন। জীবনের দীর্ঘ সময় তিনি পিঠা তৈরি ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। কিন্তু কিছুদিন আগে দিয়াশলাইয়ের আগুনে ঘটে যাওয়া এক দুর্ঘটনায় তার একটি চোখ সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে গেছে।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, চোখটি দ্রুত অপসারণ করতে হবে। তবে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি।
স্বামী আরব আলী প্রায় ১৫ বছর আগে মারা যান। তিনি ছিলেন একজন দিনমজুর। স্বামীর মৃত্যুর পর হুরতন একাই দুই মেয়ে—শিল্পী ও রিমিকে নিয়ে সংসার চালিয়ে আসছিলেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ছোট মেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন। বড় মেয়ে শিল্পী বিবাহিত হলেও তার সংসারও স্থিতিশীল নয়। এ অবস্থায় হুরতনই ছিলেন পরিবারের একমাত্র ভরসা।
চোখ হারানোর পর পিঠা তৈরি করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে তাঁর জন্য। দুইটি ছাগল বিক্রি করে যা ছিল তাঁর শেষ সম্বল, সেটিও শেষ হয়ে গেছে। এখন একেবারে নিঃস্ব ও কর্মহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি। প্রতিদিন তিন বেলা খাবার জোগাড় করাও তাঁর পক্ষে দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, মোছা. হুরতন এখনও কোনো ধরনের সরকারি সহায়তা যেমন—বয়স্ক ভাতা কিংবা বিধবা ভাতা, অথবা কোনো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আসেননি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে বহুবার গিয়েও কোনো সহায়তা পাননি তিনি।
হুরতন বলেন, “আগে পিঠা বিক্রি করেই চলতাম, এখন চোখে দেখি না—পিঠাও বানাতে পারি না। কেউ কিছু দিলে খাই, না দিলে উপোস থাকি।”
স্থানীয়দের মতে, হুরতন ছিলেন শান্ত স্বভাবের ও পরিশ্রমী নারী। দুর্ঘটনার আগ পর্যন্ত নিজের চেষ্টায় সংসার চালিয়ে গেছেন। এখন তিনি কেবলই সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায়।
একটি মানবিক আবেদন— সরকারি বয়স্ক ভাতা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা যেন অবিলম্বে মোছা. হুরতনের মতো অসহায় নারীদের প্রদান করা হয়। আমাদের সামান্য সহানুভূতিই পারে তাঁদের জীবনে নতুন আশার আলো জ্বালাতে।
ইএইচ