চট্টগ্রাম দক্ষিণ প্রতিনিধি:
এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ০৪:৫৯ পিএম
চট্টগ্রাম দক্ষিণ প্রতিনিধি:
এপ্রিল ২৩, ২০২৫, ০৪:৫৯ পিএম
জামায়াতে ইসলামীর একটি কর্মী ও সুধী সমাবেশে অংশ নেওয়ার কারণে বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের একটি মসজিদের ইমাম ও খতীবকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১৩ বছর ধরে সলেমান বাজার জামে মসজিদের ইমামতি করে আসা মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুস আলীকে মসজিদ কমিটি এ সিদ্ধান্ত জানায়।
চাকরিচ্যুত হওয়া ইউনুস আলীর অভিযোগ, গত শনিবার তিনি জামায়াত আয়োজিত একটি দ্বীনি সমাবেশে অংশ নেন। সে সময় মসজিদ কমিটির এক সদস্য ফোন করে জানান, ‘রাজনীতি করেন, মসজিদে আর নামাজ পড়াবেন না’। পরদিন ফজরের নামাজ ও শিশুদের পড়ানো শেষে জোহরের নামাজ পড়িয়ে বের হওয়ার সময় তাকে বাধা দেওয়া হয়।
ইউনুস আলী বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানিক নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ ছাড়া ইমাম বদলি করার নিয়ম নেই। তা সত্ত্বেও আমাকে মৌখিকভাবে নামাজ পড়াতে নিষেধ করা হয়। সভাপতি সাহেব এশার সময় এসে চূড়ান্তভাবে জানিয়ে দেন, আমি আর এখানে দায়িত্ব পালন করতে পারব না।’
৪৪ বছর বয়সী ইউনুস আলী জানান, তিনি কওমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা শেষে আলিয়া ধারায় কামিল (স্নাতকোত্তর) পাস করেন। তিন সন্তান নিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন মাসিক প্রায় সাড়ে ৮ হাজার টাকার সম্মানী দিয়ে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হোসাইনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইউনুস হুজুর ১৬ বছর দায়িত্বে ছিলেন। ওনার কার্যকলাপ ভালো না হওয়ায় কমিটি ওনাকে বিদায় করেছে।’ তবে কার্যকলাপ ‘ভালো না হওয়া’র নির্দিষ্ট কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
এ ঘটনার পর স্থানীয় মুসল্লিদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অনেকেই বলেন, দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করা একজন ইমামকে এভাবে বাদ দেওয়া অমানবিক। ঘটনার দিন বিকেলে মসজিদে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, ইমামের সমর্থক ও তাবলীগের বিতর্কিত সাদপন্থী অনুসারীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
বান্দরবান জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এস এম আব্দুচ্ছালাম আজাদ বলেন, ‘শুধু জামায়াতের সমাবেশে যাওয়ার কারণে যদি একজন সম্মানিত ইমামকে এভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়, তবে তা হবে খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। এটি ফ্যাসিবাদী আচরণ। ওলামা সমাজ, সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকদের এ বিষয়ে সোচ্চার হতে হবে।’
স্থানীয়রা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অনেকেই বলছেন, ব্যক্তি মত বা বিশ্বাসের কারণে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত ধর্মীয় সহনশীলতার পরিপন্থী।
বিআরইউ