আব্দুস সালাম, গুরুদাসপুর (নাটোর)
এপ্রিল ২৭, ২০২৫, ০৫:৩৮ পিএম
আব্দুস সালাম, গুরুদাসপুর (নাটোর)
এপ্রিল ২৭, ২০২৫, ০৫:৩৮ পিএম
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের গজেন্দ্র চাপিলা মৌজায় আদালতের নির্দেশে গত ২৩ এপ্রিল সকালে একটি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। এতে তিন যুগ ধরে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভানু রায় ও আকবার আলী পরিবারের সদস্যরা তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
রোববার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমিনুর রশীদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জানা গেছে, মৃত্যু মোকছেদ আলীর স্ত্রী শুভা জান বেগম ১৯৭৪ সালের একটি দলিলের ভিত্তিতে আদালতে মামলা করলে, বিজ্ঞ আদালতের আদেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভানু রায় ও আকবার আলীর পরিবার প্রায় ৩৬ বছর ধরে ভিপি জমিতে বৈধ লিজ নিয়ে বসবাস করছিলেন। পাশেই থাকা একটি ভিপি পুকুর ভোগদখল করে আসছিলেন মোকছেদ আলীর পরিবার। প্রভাবশালী হওয়ায় মোকছেদ আলীর পরিবারের বিরুদ্ধে ভানু ও আকবার পরিবারের ওপর দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে।
চাপিলা ভূমি অফিস সূত্র জানিয়েছে, গজেন্দ্র চাপিলা মৌজার ১৪২ দাগে মোট ৪৪ শতক ভিপি জমির মধ্যে ভানু রায় ১০ শতাংশ, আকবার আলী ৯ শতাংশ এবং মোকছেদ আলী ২৫ শতাংশ জমি বাৎসরিক লিজের মাধ্যমে ভোগদখল করতেন। তবে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন যে, কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ ছাড়াই আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয়েছে।
ভানু রায়ের ভাতিজা রুপ কুমার ও আকবার আলী বলেন, "দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে আমরা এখানে বসবাস করছি। আমাদের আর কোনো আশ্রয় নেই। আদালতের আদেশে বিনা নোটিশে আমাদের ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করা হয়েছে। আমরা এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছি। ১৯৭৪ সালের একটি জাল দলিলের ভিত্তিতে আমাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছি। আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো এবং প্রশাসনের কাছে পুনর্বাসনের জোর দাবি জানাচ্ছি।"
মৃত মোকছেদ আলীর ছেলে হানিফ আলী বলেন, "সবকিছু আদালতের আদেশ অনুযায়ী হয়েছে। এর বেশি কিছু বলার নেই।"
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহমিদা আফরোজ বলেন, "বিজ্ঞ আদালতের আদেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ভুক্তভোগীদের কাগজপত্র যাচাই করে আইনি পরামর্শ দেওয়া হবে। তাদের পুনর্বাসনের বিষয়েও আলোচনা চলছে।"
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর এখন একটাই দাবি, তাদের বসবাসের জায়গাতেই দ্রুত পুনর্বাসন নিশ্চিত করে মানবিক সংকট নিরসন করা হোক।
ইএইচ