Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫,

পদ্মায় অবৈধ বালু উত্তোলন, ভাঙন ঝুঁকিতে সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধ

আশিকুর রহমান হৃদয়, শরীয়তপুর

আশিকুর রহমান হৃদয়, শরীয়তপুর

এপ্রিল ২৮, ২০২৫, ০৩:৪৬ পিএম


পদ্মায় অবৈধ বালু উত্তোলন, ভাঙন ঝুঁকিতে সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধ

পদ্মা সেতু প্রকল্পের পূর্ব পাশের রক্ষা বাঁধটির পুরো দুই কিলোমিটার অংশ ভাঙনের মুখে পড়েছে। বাঁধের কাছে বিভিন্ন স্থানে নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ও ভাঙন দেখা দেওয়ায় এটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। নদী ভাঙনের ফলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে নাওডোবা-পালেরচর সড়ক, মঙ্গল মাঝি-সাত্তার মাদবর বাজার এবং চারটি গ্রামের অন্তত পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি। গত বছর নভেম্বরে বাঁধের জাজিরা প্রান্তের নাওডোবা এলাকায় ১০০ মিটার অংশ নদীতে ভেঙে পড়ে। এরপর পাউবো ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) সমীক্ষা চালিয়ে দেখতে পায়, এক কিলোমিটার অংশে বাঁধের কাছে নদী গভীর হয়ে গেছে এবং মাটি সরে যাচ্ছে। বাকি এক কিলোমিটার অংশে নদী এসে পড়ায় মাটি ভেঙে পড়ছে।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের পদ্মা নদী নাওডোবা এলাকা থেকে শুরু হয়েছে। পদ্মা সেতু এখানে নির্মিত, এবং ২০১২ সালের দিকে নাওডোবা এলাকায় নদী ভাঙন শুরু হয়। নদী ভাঙন রোধের জন্য সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ১১০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। ২০২২ সালে বাঁধের ১০০ মিটার অংশ নদীতে ভেঙে পড়ে, যার পর সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। তবে, বাঁধের অন্যান্য স্থানে ঝুঁকি বহাল রয়েছে।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ। তারা দাবি করছেন, বিএনপি নেতা ফরিদ আহমেদ প্রশাসনের সহযোগিতায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন, যা নদীর তলদেশ ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং রক্ষা বাঁধের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। বালু উত্তোলনের ফলে বসতবাড়ি, স্কুল, বাজার, কৃষিজমি এবং কবরস্থানও নদীভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।

পরিবেশবিদরা বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে, যা পদ্মা সেতু প্রকল্পের রক্ষা বাঁধের ওপর বড় বিপদ ডেকে আনবে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে তাদের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি নদীতে চলে যাবে। তারা দ্রুত প্রশাসনের কাছে বাঁধ রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।

অবৈধ বালু উত্তোলনকারী বিএনপি নেতা ফরিদ আহমেদ রয়েল বলেন, তিনি সরকার থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছেন এবং প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে।

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এর মজবুতকরণের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

ইএইচ

Link copied!