আগস্ট ৮, ২০২২, ০৮:৪৫ পিএম
বিদেশে পাচার হওয়া টাকা বিনা প্রশ্নে ফেরত আনার সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে যেকোনোভাবে আয় করা অপ্রদর্শিত অর্থ (কালো টাকা) ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধভাবে দেশে আনা যাবে। মাত্র ৭ শতাংশ কর দিলেই ওই অর্থ বৈধ হবে এবং আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করা যাবে। এ সংক্রান্ত ‘অফশোর ট্যাক্স অ্যামনেস্টি’ কার্যক্রম নিয়ে ব্যাংকগুলোর শাখা পর্যায়ে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রদর্শন ও প্রচার করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার (৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছে।
আয়কর অধ্যাদেশ অনুসারে ‘অফশোর ট্যাক্স অ্যামনেস্টি’ বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ ও প্রচার বিষয়ে সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘অর্থ আইন, ২০২২’ এর মাধ্যমে ‘আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪’ এর ধারা-১৯ এফ অনুসারে চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে আগামী বছরের (২০২৩) ৩০ জুন সময়ে ৭ শতাংশ কর দিয়ে বাংলাদেশের বাইরে যেকোনো রূপে গচ্ছিত অপ্রদর্শিত অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈধভাবে দেশে এনে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করা যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত এফই সার্কুলার গত ১৮ জুলাই জারি করেছে।
‘অফশোর ট্যাক্স অ্যামনেস্টি’ বিধান সংক্রান্ত বর্ণিত বিষয়টি শাখা পর্যায়ে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রদর্শনসহ গ্রাহকদের মাঝে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পরামর্শ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুযোগ দেয়ার পরও কালো টাকা বৈধ করতে করদাতাদের অনাগ্রহ দেখা যাচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মাত্র ২ হাজার ৩১১ জন করদাতা ঘোষণা দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বৈধ করেছেন। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ১ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর অর্জিত হয়েছে ১১৬ কোটি টাকার কিছু বেশি। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে প্রায় ২০ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বৈধ বা সাদা হয়, যেখানে ১১ হাজার ৮৫৯ জন করদাতা কালো টাকা বৈধ করেন। এটি দেশে স্বাধীনতার পর থেকে এক বছরের হিসাবে সর্বোচ্চ, যাদের মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি ব্যাংকে রাখা বিভিন্ন আমানত, এফডিআর, সঞ্চয়পত্র বা নগদ টাকার ওপর ১০ শতাংশ কর দিয়ে টাকা সাদা করেছেন।
এনবিআরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রায় সব সরকারই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছর ছাড়া সবচেয়ে বেশি অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগে এসেছে ২০০৭ ও ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়। তখন দেশের পরিস্থিতি ছিল একেবারেই ভিন্ন। ওই দুই বছরে ৩২ হাজার ৫৫৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এ সুযোগ নিয়েছিল; বৈধ হয়েছিল ৯ হাজার কোটি টাকা। তা থেকে সরকার কর পেয়েছিল এক হাজার ২০০ কোটি টাকার কিছু বেশি। এর মধ্যে ২০০৭ সালে ৮০৩ কোটি টাকা এবং পরের বছর ৪০০ কোটি টাকা কর পেয়েছিল এনবিআর।
ইএফ