আগস্ট ১২, ২০২২, ১১:৪৪ এএম
মধ্যবিত্তের উপর একের পর এক আঘাত যেন থামছেই না। কখনো গ্যাস কখনো তেল। আবার কখনো বাস বাড়া কখনো বাসা ভাড়া। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্য পণ্যের বাজারদর। গত সপ্তাহেও ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৬০ টাকায়। আর আজ সেই মুরগির দাম ২০০-২২০ টাকা। মরিচ-পেয়াজসহ সব পণ্যের দাম বাড়তি।
বৃহস্পতি ও শুক্রবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গত দুই দিনে সব মালের দামই দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় কমবেশি বেড়েছে।
ক্ষোভ আর হতাশা নিয়ে বাজার করতে আসা ব্যাক্তি রফিকুল বলেন, দিনে ৪৫০ টাকা মজুরিতে কাজ করি কাজ না পেলে সেদিন আর টাকা পাইনা। বাজারের অবস্থার সঙ্গে আমার আয়ের কোনো মিল নেই। আমার হাজিরা বাড়েনি। মজুরি আগে যা ছিল, তাই আছে। তাহলে আমরা সাধারণ মানুষরা কোথায় যাব? সরকারি চাকরিজীবীদের সমস্যা নেই।
শুধু ব্রয়লার নয়, বেড়েছে সোনালী, পাকিস্তানি কক মুরগির দামও। গত সপ্তাহেও পাকিস্তানি ককের দাম ছিল ২৪৫-২৫০ টাকার মধ্যেই। আজ বিক্রি হচ্ছে ২৭০-২৭৫ টাকায়।
বেশির ভাগ সবজি প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই দর এক সপ্তাহ আগের তুলনায় কেজি প্রতি গড়ে ১০ টাকা বেশি। কাঁচা মরিচের কেজি ছাড়িয়েছে ২৫০ টাকা।
শসা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।
করলা ৭০ টাকা, চালকুমড়া পিস ৫০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, মিষ্টিকুমড়ার কেজি ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, পেঁপের কেজি ৫০ টাকা, বরবটির কেজি ৮০ টাকা, ধুন্দলের কেজি ৬০ টাকা।
কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। শুকনা মরিচের কেজি ৪০০ টাকা।
বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। পেঁয়াজের দাম কমেছে, কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। আর একটু ভাল মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়।
রসুনের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বাজারে চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। আদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকায়।
মোটা চাল ২ টাকা এবং মাঝারি ও সরু চাল প্রতি কেজি ৩ টাকা করে বেড়েছে। বাজারে এখন আর ৫০ টাকা কেজির নিচে চাল নেই। মাঝারি চাল প্রতি কেজি ৫৩ থেকে ৫৮ টাকা এবং সরু চাল ৬৫ থেকে ৭৮ টাকায় কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
টিসিবির হিসাবে, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের সর্বনিম্ন দাম ছিল ৩০ টাকা। সেই হিসাবে এখন দাম প্রায় ৬৭ শতাংশ বেশি।
এছাড়া খোলা আটা ও ময়দা কেজিতে তিন টাকা, বোতলজাত সয়াবিন লিটারে ৫ টাকা, চিনি ২ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল কেজি প্রতি ১০ টাকা, দেশি রসুন ১০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সব পণ্যের দামের সঙ্গেই ট্রাক ভাড়া যুক্ত। জ্বালানির দাম বাড়ার পর ট্রাক ভাড়া ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেড়েছে। এর সঙ্গে পণ্য ভেদে নানা কারণও রয়েছে, যা দাম বাড়িয়েছে।
মুদি দোকানে ফার্মের প্রতি হালি ডিম ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা সাধারণত ৩২ টাকার আশপাশে থাকে।
প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৭ টাকায়। আর প্যাকেট চিনি ৯২ টাকায়। এছাড়াও এসব বাজারে দেশি মসুরের ডালের কেজি ১৪০ টাকা। ভারতীয় মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।
প্যাকেট আটার কেজি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। খোলা আটা ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। ভোজ্য তেলেও কোনো সুখবর নেই। প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২০৫ টাকায়।
ইএফ