অক্টোবর ৫, ২০২২, ০৬:১৮ পিএম
এবার ভুয়া পিএইডির অভিযোগ উঠেছে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধানের বিরুদ্ধে। ডেইজি নিলুফার শারমিন নামের ওই কর্মকর্তা ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্যাংকটিতে হেড অব হিউম্যান রিসোর্স (মানবসম্পদ বিভাগ) এর প্রধান হিসেবে যোগ দেন।
সম্প্রতি আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন নামের মানবাধিকার সংস্থার কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ আসার পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
২০০৭ সালে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ইন্টার্নশিপ করার মাধ্যমে চাকরিজীবন শুরু হয় ডেইজির। ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত ইস্টার্ণ ব্যাংকে এসএমই শাখায় সহযোগী ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরি করেন তিনি। এরপর যোগ দেন ওয়ান ব্যাংকে। সাউথইস্টে যোগদানের আগে সেখানে ট্রেইনিং শাখায় চাকরি করতেন ডেইজি। সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে সবশেষ চাকরি করলেও এক অদৃশ্য ক্ষমতাবলে দুই ধাপ পদোন্নতি নিয়ে সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্স ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসএভিপি) হিসেবে সরাসরি আসেন সাউথইস্টে। তার এ যোগদানে দুর্নীতির দায়ে চাকরিচ্যুত সাউথইস্টের সাবেক উপদেষ্টা জাকির আহমেদ খানের আশীর্বাদ ছিল বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।
নিজের ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে মানবসম্পদ বিভাগে কাজের কোনো অভিজ্ঞতা না থাকার পরেও বর্তমানে ব্যাংকটির শীর্ষ পদের এক কর্মকর্তার সঙ্গে বিশেষ সখ্যতার কারণে বিভাগ প্রধানের পদ বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সবকিছুর পরেও তার পিএইডি ডিগ্রি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ব্যাংক পাড়ায়।
নিজের প্রোফাইলে তিনি উল্লেখ করেন Diversity Management and Affirmative Action Program বিষয়ে তিনি ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে পিএইডি ডিগ্রী অর্জন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করলেও তার দাবি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধীনে তিনি এই পিএইডি করেছেন, তবে স্বপক্ষে কোনও যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেননি। এ বিষয়ে যোগাযোগ করার পর ডেইজি সামনাসামনি কথা বলবেন বলে জানান।
তবে, অনলাইন সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনুসন্ধান করার পর একই বিষয়ে অন্য একজনের গবেষণাকর্মের সঙ্গে প্রায় ৮৫ ভাগ হুবহু মিলে যায়, যা তার চৌর্যবৃত্তির মনোভাবকে প্রমাণ করে। একটি শীর্ষ ব্যাংকে নকল ডিগ্রিধারী কর্মকর্তার এই জালিয়াতির বিষয়টি জনসম্মুখে আনা প্রয়োজন। তাই চলতি সপ্তাহের মধ্যে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর শামস ডেইজি নিলুফার শারমিনের ভুয়া পিএইডি ডিগ্রিকে চ্যালেঞ্জ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম. কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তদন্তের মাধ্যমে তার জালিয়াতি প্রমাণ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেএস