Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

প্রযুক্তি শিক্ষার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন আমাদের লক্ষ্য: উপাচার্য

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

নভেম্বর ১, ২০২২, ০৮:৫৭ পিএম


প্রযুক্তি শিক্ষার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন আমাদের লক্ষ্য: উপাচার্য

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যদি সপরিবারে হত্যা করা না হতো, তাহলে আজকে এই বাংলাদেশ প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উন্নতিতে সবাইকে ছাড়িয়ে যেতো। পৃথিবীর ইতিহাসে উন্নত, শক্তিধর, মানবিক, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হতো। কিন্তু বাংলাদেশবিরোধী শক্তি আমাদের সেই বাংলাদেশ হওয়ার সুযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে। স্বাধীনতার চার মূলনীতিকে প্রতিস্থাপন করেছে সামরিক শাসনের যাঁতাকলে। আমরা অনেক দিন সামরিক শাসনের যাঁতাকলে ছিলাম।’ 

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন উপাচার্য। ‘চেতনায় মুজিব’ সংগঠনের কেন্দ্রীয় পরিষদ আয়োজিত “নতুন প্রজন্মের ভাবনায় ডিজিটাল বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা” শীর্ষক আলোচনা ও ফ্রি ডেন্টাল ক্যাম্প অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন উপাচার্য।

তরুণ প্রজন্মকে উদ্দেশ করে দেশের প্রথিতযশা এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, ‘তোমরা আজকে যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখছো, সেটির কারিগর আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘৯০ পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে ভোট এবং ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। তিনি এমনই একজন মানুষ, যিনি পিতার মতো দৃঢ়। ভোট এবং ভাত- এ দু’টি প্রত্যয় নিয়ে তিনি যে আন্দোলনে নেমেছিলেন, ‘৯০ এর গণআন্দোলনের মাধ্যমে সেটি তিনি নিশ্চিত করেছিলেন। গণতন্ত্রকে তিনি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলেন। ভোট এবং ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেই তাঁর আলো নেভেনি, বরং আরও বেশি আলোকিত বাংলাদেশ তৈরি করার জন্য তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা ভাবলেন। অনেকেই তখন বলেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রত্যয় এখানে বাস্তবায়ন হবে না। কিন্তু তিনি জানতেন, সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে বঙ্গবন্ধু যেভাবে রাজনৈতিক সূত্রে গেঁথে দিয়ে গেছেন। বীর বাঙালিকে একটি নেটওয়ার্কের আওতায় এনে উন্নয়নের সূচকে আমরা এগিয়ে যাবো, সেটিই নিশ্চিত করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বলেন, ‘আজও আমাদের নানা সীমাবদ্ধতা আছে। এই ক্যাম্পাস আরও সুন্দর হতে পারতো, আরও সাজানো হতে পারতো। তোমরা যারা একই পোশাক পরে সামনে বসে আছো, তোমাদের অনেকের হাতে মুঠোফোন আছে। অনেকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ই-মেইল আইডি আছে। তোমাদের বন্ধু আছে। নিজের পড়ার টেবিলে, হাঁটতে হাঁটতে, ক্যাম্পাসে নতুন বন্ধু খোঁজ। একে একে নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্কের মধ্যে তোমাদের বন্ধুত্ব তৈরি হয়। তোমরা হয়তো অনলাইনে এখন পড়াশোনা বেশি করো। এসব কিছুর মধ্যে আসতে আমাদের ৫০ বছর লেগেছে। আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছরের পেছনে যদি তাকাই, তাহলে দেখবো শতবছরের বঞ্চনার ইতিহাস। আমাদের মানুষজন স্বাচ্ছন্দে ছিল না। এই ধরনের পোশাক পরার সামর্থ্য ছিল না। নিগৃহে ছিলাম। বঞ্চিত ছিলাম। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এক মহানায়কের জন্ম হয়েছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাঙালির হাজার বছরের বঞ্চনা, শোষণ থেকে মুক্তি দিতে একের পর এক স্বাধীনতার বীজ বুনছেন। তাকে কারারুদ্ধ করেছে পাকিস্তানের শোসকরা। কারাগারে বসে মানচিত্র এঁকেছেন। সেটির নাম বাংলাদেশ। সবুজে-শ্যামল বাংলার মানচিত্র আঁকার পেছনে তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল বাংলার মানুষকে শোষণ, বঞ্চনা, নিগৃহ থেকে মুক্ত করা। আজকে তোমরা যারা এতটুকুন ভালো আছো, সেই ভালো থাকার জন্য তিনি সারাটা জীবন সংগ্রাম করে তাঁর শিশুপুত্রকে আদর এবং স্নেহ বঞ্চিত করে একটি বাংলাদেশ রচনা করেছেন। এর মধ্য দিয়েই আজকে আমরা যতটুকুন ভালো আছি।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘তোমাদের উচ্চারণে বাংলা যেন শুদ্ধ হয়। তোমার কথায় যেন শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং শিল্পের বিকাশ ঘটে। তোমার সত্তায় যেন মুক্তিযুদ্ধ থাকে। তোমার অস্থিমজ্জায়, চিন্তনে যেন আমাদের অর্থনৈতিক বিকাশ থাকে। এইসব তোমরা-আমরা মিলে যদি না করতে পারি, তাহলে আগামীর বাংলাদেশ মুখ থুবড়ে পড়বে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী অতন্ত্র প্রহরীর মতো বাংলাদেশকে ধরে রেখেছেন। আমরা আরও উন্নত হবো, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা ইউক্রেন-রাশিয়ার মতো যুদ্ধবাজ জাতি হতে চাই না। আমরা একটি মানবিক বাংলাদেশ হতে চাই। লাখো বাঙালি শরণার্থীকে আশ্রয় দেই অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও। মানবিক বাংলাদেশ আমাদের দর্শন।’

অনুষ্ঠানে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মহি উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বিশিষ্ট সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত প্রমুখ।


ইএফ

Link copied!