নভেম্বর ২০, ২০২২, ০৭:৩০ পিএম
দেশের ও অর্থনীতির স্বার্থে গঠনমূলক সমালোচনা পাশাপাশি ভালো উদ্যোগগুলো তুলে ধরতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তৈরী পোষাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করতে সংগঠনটির নতুন উদ্যোগের বিষয়ে গণমাধ্যমে তুলে ধরতে রোববার দুপুরে উত্তরাস্থ বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এই আহবান জানান সভাপতি ফারুক হাসান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সংবাদকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ফারুক হাসান। তিনি বলেন- আমাদের অনেক সমস্যা রয়েছে, সেগুলো অস্বীকার করছি না। তবে এসবের পাশাপাশি আমাদের দেশের বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিও আছে। আমরা বিশ্বে তৃতীয় বৃহৎ চাল উৎপাদনকারী, সবজি উৎপাদনকারী। আমাদের সর্বোচ্চ সংখ্যক গ্রীন ফ্যাক্টরি আছে। শুধু গার্মেন্টস নিয়ে বললেই অনেক কিছু বলার আছে আমরা এক্ষেত্রে বিশ্বে ২য় অবস্থানে। ডেনিমে বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছি। আমরা ইউরোপের সবচেয়ে বড় রফতানিকারক চীনের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছি, যে কোন মুহুর্তে ছাড়িয়ে যাবো। এই পজেটিভ নিউজগুলো আমাদের মিডিয়ায় তুলে ধরলে তখন বিদেশী মিডিয়াগুলোও আরো বেশি করে তুলে ধরবে। আমি মনে করি দেশের স্বার্থে, অর্থনীতির স্বার্থে গঠনমূলক সমালোচনা করুন। তবে এর সাথে ভালো উদ্যোগগুলোও তুলে ধরুন।
মেইড ইন বাংলাদেশ উইক সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন- আমাদের এখানে বেশ কিছু বিদেশী এসেছিলেন। এদেশে অবস্থান করার সময়ে তারা সবাই কারেন্সি ব্যবহার করেছেন। ফলে আমরা তাদের কাছ থেকে কিছু ফরেন কারেন্সি পেয়েছি। পাশাপাশি আমাদের বেশ কিছু বিদেশী পার্টনার ও স্টেকহোল্ডার রয়েছেন। তারাও আমাদের প্রোগ্রামটি বাস্তবায়নের জন্য বেশ কিছু ফরেন কারেন্সি পাঠিয়েছেন। এসবই আমাদের অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও ভূমিকা রেখেছে।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্রয়াদেশ কমার পাশাপাশি বায়াররা অন্যদেশে শিফট হচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক হাসান বলেন- ভিয়েতনাম, পাকিস্তান বা অন্য কোন দেশে আমাদের অর্ডারগুলো যায়নি। বরং আমরা অন্যদেশগুলো আমাদের সাথে যুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছি। অবশ্য গত জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে অর্ডার কম আসছে। এটা শুধু আমাদের দেশেই নয়, সব দেশেই একই পরিস্থিতি। বলা যায়, আমাদের কেকটা আগের চেয়ে ছোট হয়ে গেছে। সেখানে আমাদের অংশটা আগের তুলনায় ছোট। কেকটা বড় হলে হয়তো আমাদের ভাগেরটাও একটু বড় হতো। তবে সার্বিকভাবে আমরা ভালো অবস্থানেই আছি। আমাদের যে এনার্জি সংকট রয়েছে সেটাও সমাধান হচ্ছে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উন্নতি করেছে, গ্যাসও উন্নতি করবে। আমরা এটা নিয়ে সরকারের সাথে আলোচনা চালাচ্ছি। আমরা আশা করি আগামীতে এই সমস্যা থাকবে না।
এসময় আগামী দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর আলোকপাত করে সকল রাজনৈতিক দলকে অর্থনৈতিক বিষয়গুলোতে সহনশীল আচরণ প্রদর্শণে অনুরোধ জানান বিজিএমইএ সভাপতি। তিনি বলেন- যারা রাজনীতি করেন, দেশের জন্যই করেন। তারা তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচী অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের বাইরে রাখবেন বলেই আশা করি। কারন অর্থনীতিতে আঘাত আসলে রাজনীতি আরো কঠিন হয়ে ওঠে। তাই সরকার ও বিরোধী দলের প্রতি অনুরোধ থাকবে মানুষকে কষ্ট দিয়ে যেন কোন কর্মসূচী দেয়া না হয়, যে অর্থনীতি ধ্বংস হয়। আমরা উভয়ের সাথে বসবো, কথা বলবো। দেশ সবার আগে, আমরা সেটা তাদের কাছে তুলে ধরবো।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিজিএমইএ’র পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও কর্মকর্তারাসহ সাবেক মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ রাফাহ নানজেবা তোর্সা, দেশের ঐহিত্য ইউরোপে ছড়িয়ে দিতে তরুণদের সংগঠন উই লাভ রিক্সা’র প্রেসিডেন্ট ও হুইলচেয়ার ক্রিকেট বাংলাদেশ’র অধিনায়ক উপস্থিত ছিলেন।
এবি