অর্থনীতি প্রতিবেদক
জানুয়ারি ২১, ২০২৩, ০৭:০৯ পিএম
অর্থনীতি প্রতিবেদক
জানুয়ারি ২১, ২০২৩, ০৭:০৯ পিএম
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদিত পণ্যের ব্যয় বাড়বে। এতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যরিস্টার সামীর সাত্তার। সমসাময়িক অর্থনীতি ও ২০২৩ সালে সংগঠনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে শনিবার (২১ জানুয়ারি) ডিসিসিআই মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা বলেন।
ব্যরিস্টার সামীর সাত্তার বলেন, সরকার সম্প্রতি শুধুমাত্র শিল্পখাতে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করেছে, বাসা-বাড়ি এবং কৃষিখাতের জন্য তা প্রযোজ্য নয়। দেশের ব্যবসায়ী সমাজ শিল্পখাতে পণ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে উচ্চমূল্যে হলেও নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ পেতে চায়, যেন স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আমাদের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়। তবে এটা সত্য, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আমাদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উপর কিছুটা হলেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ এটি তাদের পণ্য উৎপাদন ব্যয় বাড়াবে।
এক্ষেত্রে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি কেবলমাত্র একমুখী হওয়া উচিত হবে না বরং আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির মূল্য হ্রাস পেলে কালক্ষেপন না করে, সে অনুপাতে স্থানীয় বাজারেও যেন জ্বালানির মূল্য সমন্বয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
এক্ষেত্রে তরুণ উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ সহজলভ্য করার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। বলেন, ২০২৩ সালে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। বৈশ্বিক মন্দা অবস্থার কারণে স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকোচিত হয়েছে। এ বছর কর্মী ছাঁটাই না করে প্রফিট মার্জিন কমিয়ে হলেও ব্যবসায় টিকে থাকাই হবে বড় সফলতা। আমরা দেখেছি মাইক্রোসফট ও গুগলের মতো প্রতিষ্ঠান ১০ থেকে ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। জাপানের মতো দেশে মুদ্রাস্ফীতি গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেখানে বাংলাদেশ এর বাইরে নয়। দেশে প্রতিবছর প্রায় ২০ লক্ষ তরুণ শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকুরী বাজরে প্রবেশ করে। তবে বিপুল এ জনগোষ্ঠীর জন্য উপযোগী কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা বেশ চ্যালেঞ্জের বিষয়। এদের অনেকেই হয়ত চাকরি পাবে, তবে অবশিষ্টদের মধ্যে একটি বড় অংশ উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবে। আমাদের তরুণ উদ্যোক্তারা তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে বেশ উদ্ভাবনী দক্ষতার অধিকারী। বৈশ্বিক অস্থিতিশীল বাজারে সিএমএসএমই খাতের তরুণ উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে ঋণের সজলভ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিদ্যমান জটিল পরিস্থতিতে তাদেরকে সহজ শর্তে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে এলসি’র শর্ত সহজ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান ডিসিসিআই সভাপতি। পাশাপাশি বাজার মনিটরিংয়ে গুরুত্ব প্রদান করেন।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাতারতি বৃদ্ধি সম্ভব নয় জানিয়ে বলেন, এজন্য আমাদেরকে রেমিট্যান্স আহরণ বাড়াতে প্রণোদনা বৃদ্ধি ও রপ্তানি আয় বাড়ানোর উপর আরো বেশি হারে জোরারোপ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সমসাময়িক অর্থনীতির ১০টি বিষয়বস্তুর উপর বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি ২০২৩ সালে ডিসিসিআই’র কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। চলতি বছরে যে সব বিষয়গুলো উপর ডিসিসিআই অধিক গুরুত্বারোপ করবে সেগুলো হলো- সিএমএসএমই, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বেসরকারি ও বৈদেশিক বিনিয়াগ, আর্থিক খাত, কর ব্যবস্থাপনা, এলডিসি গ্রাজুয়েশন, অর্থনৈতিক কূটনীতি, অবকাঠামো ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রভৃতি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ জুনায়েদ ইবনে আলী সহ পরিচালনা পর্ষদের অন্য সদস্যরা।
কেএস