ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩, ০৭:১৯ পিএম
‘আমার জীবন আমার সম্পদ, বীমা করলে থাকবে নিরাপদ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আগামি বুধবার (১ মার্চ) ঢাকাসহ সারাদেশে পালিত হবে জাতীয় বীমা দিবস। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সমন্বয়ে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে দিবসটি উদযাপন করা হবে।
সোমবার আইডিআরএ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
এ সময় আইডিআরএর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, দেশের বীমা খাতে সচেতনতার অভাব রয়েছে। বীমার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব মানুষের সামনে তুলে ধরার ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়ে গেছে। এছাড়া বীমা দাবি পরিশোধেও অনেক ব্যর্থতা রয়েছে। এতে খাতটিতে ব্যাপক অনাস্থা তৈরি হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিরুপ প্রচারণাও রয়েছে। তাই মানুষ এখন বীমার বিকল্প খুঁজছে। একইসঙ্গে খাতটিতে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে।
তিনি বলেন, ৩০ শতাংশ বীমা দাবি এখনো অপরিশোধিত রয়ে গেছে। একটি কোম্পানি বাদ দিয়ে হিসাব করলে এটি ৮৯ শতাংশে দাঁড়াবে। এই চিত্রই বলে দেয় এখানে কতটা সমস্যা রয়েছে। আমরা কঠোরতার সাথে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। বার বার সময় বেধে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সফলতা আসছে না। যদি মনে হয় এসব কোম্পানি রাখার চেয়ে না রাখা ভাল; তাহলে বন্ধ করে দেয়া হবে। গ্রাহকের স্বার্থকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আমরা কাজ করব।
আইডিআরএ জানায়, জাতীয় বীমা দিবস, ২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে সভাপতিত্ব করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে আইডিআরএ জানায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার সময়ে সর্বস্তরের জনগণকে সংগঠিত করার মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে এ অঞ্চলের প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। তারিখটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সরকার ১ মার্চ কে ‘জাতীয় বীমা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন।
স্বাধীনতার ৫২ বছরে দেশে বীমা কোম্পানির সংখ্যা এখন ৮১টি। এর মধ্যে লাইফ বীমা কোম্পানি আছে ৩৫ টি। আর নন-লাইফ বীমা ৪৬টি। গত কয়েক বছরে নানামুখী সঙ্কটের মধ্যেও জীবন বীমার তহবিল ও সাধারণ বীমার সম্পদ দুটোই বেড়েছে।
আরও বলা হয়, ২০২১ সালে করোনা মহামারির সঙ্কটের মাঝে বিশ্বব্যাপী মোট বীমা প্রিমিয়ামের প্রকৃত প্রবৃদ্ধি যেখানে ৩ দশমিক ৪ ভাগে নেমে এসেছিল, সেখানে বাংলাদেশে বীমা প্রিমিয়ামের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ভাগ। যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক শুন্য ৪ ভাগ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালের শেষে গ্রস প্রিমিয়ামের পরিমান দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। যার মধ্যে লাইফ বীমার গ্রস প্রিমিয়ামের পরিমান দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। আর নন লাইফে এই পরিমান ৫ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। যা সংকটের এই সময়ে দেশের ব্যাংকিং খাতে বড় তারল্যের যোগান দিচ্ছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানির অর্জিত প্রিমিয়ামের ওপর ২০২২ সালে ১ হাজার ৩০৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ভ্যাট ও ট্যাক্স সরকারের কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে। বিগত বছরে লাইফ এবং নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলোর উত্থাপিত বীমা দাবির মোট সংখ্যা ৩০ লাখ ৬২ হাজার চারশত ৮টি। বীমা কোম্পানি মোট ১৯ লাখ ১২ হাজার ৮৬৯ টি বীমা দাবি নিষ্পত্তি করেছে।
এমআরএইচ/ এবি