Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫,

নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের খাদ্য তালিকায় মাংস নেই

মো. মাসুম বিল্লাহ

মার্চ ১১, ২০২৩, ১১:১৮ এএম


নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের খাদ্য তালিকায় মাংস নেই

মাদারীপুরের শিবচরে বেশির ভাগ মানুষের প্রতিদিনের আয়ের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে মাংস। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত অনেক পরিবার প্রোটিন যোগানদানকারী মাংস খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছেন। অনেক পরিবার শুধু বাড়িতে অতিথি এলে নিরুপায় হয়ে মাংস কেনার সাহস দেখায়। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এই মানুষগুলোর সাধ্যের মধ্যে আর থাকবে না মাংস।

শনিবার (১১ মার্চ) শিবচরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে সরজমিনে দেখা যায়, রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। গত কয়েকদিন ধরে খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায়। সোনালি মুরগির প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায়। এর আগে দেশের বাজারে কখনো মুরগির দাম এতো বাড়েনি।

অন্যদিকে শিবচরের বিভিন্ন বাজারে গরুর মাংস গত সপ্তাহের থেকে ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেড়ে ৮০০ থেকে ৮২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া খাসির মাংস এক হাজার টাকা থেকে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, গরু-ছাগল ও মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করতে হয়েছে। যার কারণে গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে কম বিক্রি হয়েছে।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন খলিলুর রহমান। গরুর মাংস কিনতে এসেছিলেন তিনি। জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘গরুর মাংসের দাম বেড়ে যে পর্যায়ে গেছে, ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরিজীবীদের গরুর মাংস খাওয়ার দিন শেষ। আগে মাসে দু-একবার খাওয়া গেলেও এখন আর গরুর মাংস কিনে খাওয়ার অবস্থায় নেই।’

ভ্যানচালক আলতাফ মিয়া বলেন, ‘মানুষ একটু ভালো খাবার খেতে চায়। আমিও মাংস কিনতে বাজারে গিয়েছিলাম। তবে প্রতিকেজি খাসির মাংস ১১৫০ টাকা, গরুর মাংস ৮২০ টাকা শুনে না কিনে চলে আসলাম মুরগির দোকানে। মুরগির দাম ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা চায়। তাই মাংস না কিনে চলে আসলাম।

বেইলি ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক। গরু, খাসির মাংস আর ব্রয়লার মুরগির আকাশ ছোঁয়া দাম। মধ্য ও নিম্নবিত্তরা মাংস কিনতে গেলে দম বন্ধ হয়ে আসে।

শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর বাজারের মামা ভাগিনা গোস্ত বিতানের মালিক মো: মনির হোসেন বলেন, ‘আমি চাই কম দামে গরু-খাশির মাংস বিক্রি করতে। তবে আমাদের কিছু করার নেই। গরু-ছাগল বেশি দামে কিনতে হয়েছে। ফলে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়েছে। যে গরু ৮০ হাজারে কিনেছি গত সপ্তহে সেই গরু ১ লাখ টাকায় কিনতে হয়েছে। ছাগলেরও একই অবস্থা।

মো. মনির হোসেন আরও বলেন, ‘গত  সপ্তহের তুলনায় এই সপ্তহে কম বিক্রি হয়েছে। মানুষ এত অসহায় হয়ে পড়েছে মাংস ৩০০ গ্রাম থেকে শুরু করে যে যতটুকু ইচ্ছে কিনে নিয়েছে। গরুর মাংস ৮০০ টাকা, খাশির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি করেছি।

বেইলি ব্রিজ কাঁচাবাজার এলাকার মুরগি ব্যবসায়ী আলমগীর শেখ বলেন, ‘প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২৭০ টাকায় আর সোনালি মুরগী ৩৪০ টাকায় বিক্রি করেছি। বাজারে ক্রেতার ভিড় ছিল। তবে মুরগির দাম বেশি হওয়ার কারণে মুরগি না কিনে ফেরত গিয়েছেন অনেকে।’

এআরএস

Link copied!