Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে যে ব্যাখ্যা দিল সোনালী লাইফ কর্তৃপক্ষ

আমার সংবাদ ডেস্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক

ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩, ০৩:৪২ পিএম


অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে যে ব্যাখ্যা দিল সোনালী লাইফ কর্তৃপক্ষ
ছবি: সংগ্রহীত

দেশের চতুর্থ প্রজন্মের বীমা প্রতিষ্ঠান সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স নিয়ে সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। ওই সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ব্যাখ্যা প্রদান করেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কোম্পানির চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা এমন একটি সময় ঘটেছে যখন আমি সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডার, পরিচালক বা চেয়ারম্যান ছিলাম না। উল্লেখ্য যে, গত ২৮ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে আমি কোম্পানীর চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হই। এর আগে আমি কোম্পানীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। শুধুমাত্র আমার ১৫ তলা ভবনের মালিক আমি; যা সোনালী লাইফের অফিস হিসাবে পরিচিত। আমি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে কোম্পানীর শুধুমাত্র একজন পরিচালক ছিলাম।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কয়েক দশক ধরে একটি সমৃদ্ধ উদ্যোক্তা ব্যাকগ্রাউন্ড এবং বিজিএমইএর প্রাক্তন সভাপতি হিসেবে জনাব কুদ্দুস তাঁর অভিজ্ঞতা দিয়ে কোম্পানীকে সমৃদ্ধ করেছেন। ২০২৩ সালে কোম্পানীর কার্যক্রমে অসঙ্গতি লক্ষ্য করে তিনি স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য একটি অভন্ত্যরীণ তদন্ত শুরু করেছিলেন। এই তদন্তে কোম্পানীর অভ্যন্তরীণ একটি গোষ্ঠীর স্বার্থের কথা উন্মোচিত হয়; যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র জালিয়াতি এবং জালিয়াতিপূর্ণ ডকুমেন্ট তৈরিতে জড়িতদের পদত্যাগ করতে হয়।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদে ভবন মালিক এবং সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর একটি সমঝোতা স্মারক উপস্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গোলাম কুদ্দুস বলেন, সংবাদে উপস্থাপিত সমঝোতা স্মারকটি জাল এবং উক্ত নথিতে আমার স্বাক্ষরও জাল করা হয়েছে। স্বাক্ষরিত সমঝোতাটি বানোয়াট। যাতে ৫ অক্টোবর, ২০২১ এর একটি মিথ্যা তারিখ দেওয়া। যা একটি অবৈধ দলিল। তাছাড়া  ভুলভাবে উপস্থাপন করা নথিটি ৫৮ হাজার ৮০০ বর্গফুট পরিমাপের সম্পত্তি ক্রয়/বিক্রয়ের জন্য একটি স্থানকে মিথ্যাভাবে নির্দেশ করে। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ৩৫০ কোটি টাকায় অফিস ভবন স্থানের মূল্য স্বারকে এবং আইডিআরএ আবেদনের সাথে উল্লিখিত ১১০.০৫ কোটি টাকার স্থলে প্রতারণামূলক ভাবে ৩৫০ কোটি টাকার উল্লেখ করা হয়। প্রকৃত বিবেচ্য পরিমাণ থেকে জালিয়াতিপূর্ণ সমঝোতা চুক্তি তৈরি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এই নথিগুলো হেরফের করার পেছনে উদ্দেশ্য হল মূল স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করা। সম্ভাব্যভাবে কোম্পানীর ব্যবসা বৃদ্ধির গতিপথকে হ্রাস করা। এই ধরনের কার্যকলাপ যদি রোধ করা না হয়, তাহলে কোম্পানীর সুনামকে ক্ষতিগ্রস্থ করার এবং এর অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্টেকহোল্ডারদের বিভ্রান্ত করতে এবং সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর প্রবৃদ্ধি আটকানোর জন্য জাল স্বারকটি তৈরি করা হয়েছে। কোম্পানীর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি আমার অঙ্গীকার অটল রয়েছে।

কোম্পানির অভ্যন্তরীণ তদন্ত বন্ধ করার জন্য চাপের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও জনাব কুদ্দুস স্থিতিশীল ছিলেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। জনাব কুদ্দুস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর চলমান তদন্তকাজ আরও গতি পায়। এতে একটি মহল ক্ষিপ্ত হয়। তারা কোম্পানী এবং জনাব কুদ্দুসকে দুর্বল করার জন্য জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন ডকুমেন্ট তৈরি করেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোম্পানীর উল্লেখযোগ্য উন্নয়নে পৃষ্ঠপোষক পরিচালক মিসেস শাফিয়া সোবহান চৌধুরী, মিসেস ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া এবং জনাব শেখ এম ড্যানিয়েল তাদের কাছে বরাদ্দকৃত শেয়ারের বিপরীতে নিজ নিজ উৎস থেকে অর্থ পরিশোধ করেন। শুধু তাই নয়, তৎকালীন চেয়ারম্যান এবং সিইও’র অধীনে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যলোচনা করে রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ (RJSC) এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক আইনের মাধ্যমে নিয়ম ও প্রবিধান অনুসারে অর্থ পরিশোধ করা হয়।

একটি পরিবার হিসাবে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে জনাব কুদ্দুস কোম্পানীকে বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ হুমকি থেকে রক্ষা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি কোম্পানীর সদিচ্ছা ও সুনামকে কলঙ্কিত না করে মিথ্যা তথ্য প্রচার ও প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানান।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংবাদ প্রকাশের পর যে উদ্বেগগুলো তৈরি হয়েছে তা দূর করার জন্য জনাব কুদ্দুস প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র উপস্থাপন করবেন। তিনি বাংলাদেশের বিচার বিভাগ ও আইন আদালতের প্রতি আস্থার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং কোম্পানীর সততা ও সমৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য প্রচলিত আইনের আশ্রয় গ্রহণের পরিকল্পনা করেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জনাব কুদ্দুস এসব অভিযোগ সংগঠিত হওয়ার সময় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিষয়গুলো যদি সত্যি হতো, তাহলে সেগুলো আগে সামনে আনা হয়নি কেন? চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তনের পরে এবং তদন্ত চলাকালে কিছু কর্মীদের পদত্যাগের পরে অভিযোগগুলো প্রকাশিত হওয়া নিয়ে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।

তিনি সোনালী লাইফের সঙ্গে সম্পৃক্ত গ্রাহকসহ সবাইকে সোনালী লাইফের প্রতি আস্থা রাখার অনুরোধ জানান।

এআরএস

Link copied!